সরকারি স্টলেই অগ্নিমূল্য আনাজ

শহরের কোনও বাজারে আনাজের দর নয়। কলকাতা ও লাগোয়া পুরসভা এলাকায় সরকারের সুফল বাংলা স্টল ও ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে এই দামে আনাজ বিক্রি হয়েছে চলতি সপ্তাহে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে যা বাজারের দামের তুলনায় বেশি। রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিচ্ছি।’’

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ১০:৫০
Share:

মিষ্টি কুমড়োর কেজি ২৬-২৭ টাকা, কাঁচা কুমড়ো ২৯ টাকা, কুঁদরি ২৪ টাকা। শহরের কোনও বাজারে আনাজের দর নয়। কলকাতা ও লাগোয়া পুরসভা এলাকায় সরকারের সুফল বাংলা স্টল ও ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে এই দামে আনাজ বিক্রি হয়েছে চলতি সপ্তাহে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে যা বাজারের দামের তুলনায় বেশি। রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিচ্ছি।’’

Advertisement

চলতি সপ্তাহেই নবান্নে টাস্কফোর্সের বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেছেন, মাঝপথে ফড়েরা অতিরিক্ত লোভ করায় আনাজের দাম বাড়ছে। তাঁর নির্দেশ, অতিরিক্তি দাম বাড়া আটকাতে বাজারগুলিতে কড়া নজরদারি চালাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই পর্যবেক্ষণের পরে খোদ সরকারি স্টলে আনাজের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনেরই একটি অংশের বক্তব্য, চাষিদের থেকে আনাজ কেনা থেকে শুরু করে খোলা বাজারে তা পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত ফড়েদের লম্বা হাত থাকে। বলা যায়, বৃষ্টির সময় ফড়েরাই এই গোটা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই দামবৃদ্ধির পিছনে তাঁদের বড় ভূমিকা রয়েছে। টাস্কফোর্সের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীও সেটাই ইঙ্গিত করেছেন।

কিন্তু সরকারি ব্যবস্থাপনায় যে স্টল ও ভ্রাম্যমাণ গাড়ি কলকাতা ও শহরতলিতে ছড়িয়ে রয়েছে, সেখানে আনাজ আসে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে। সরকারের উদ্দেশ্য হল, একদিকে চাষিদের ন্যায্য দাম পাইয়ে দেওয়া, অন্য দিকে সাধারণ মানুষের কাছেও সঠিক দামে আনাজ পৌঁছে দেওয়া। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি ব্যবস্থায় কোনও স্তরেই ফড়েদের ভূমিকা নেই।

Advertisement

সরকারি কর্তাদের দাবি, টোম্যাটো, বেগুন, আলু, পেঁপে-সহ বেশির ভাগ আনাজের দাম খোলা বাজারের চেয়ে কম। তা হলে কুমড়ো, কুঁদরি, পুঁই শাকের দাম বেশি কেন? রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানাচ্ছেন, চলতি সপ্তাহে এক দিন হাতিবাগান থেকে তিনি ২০ টাকা কেজি দরে কুমড়ো কিনেছেন। কৃষি বিপণন দফতরের কর্তাদের ব্যাখ্যা, কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার জন্য আনাজ কেনা হয় সিঙ্গুরের চাষিদের থেকে। ২২ অগস্ট সিঙ্গুরে কুমড়োর পাইকারি দর ছিল কেজি প্রতি ১০ টাকা। তখন সরকারি স্টলে তা বিক্রি হয়েছে ১৭ টাকা কেজিতে। কিন্তু ২৩ অগস্ট সরকারকেই কুমড়ো কিনতে হয়েছে ২০ টাকা কেজি দরে। তাই তা বিক্রি করতে হয়েছে ২৭ টাকায়।

অথচ ওই একই সময়ে বাঁকুড়া, নদিয়া, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনায় কুমড়োর পাইকারি দর ছিল ১০-১১ টাকা কেজি। তা হলে সেখান থেকে আমদানি করা হল না কেন? সরকারি কর্তাদের যুক্তি, সারা বছর যে চাষিরা কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার সুফল বাংলার স্টলের জন্য আনাজ সরবরাহ করেন, তাঁদের কথা ভেবে অনেক সময় বেশি দামেও আনাজ কিনতে হয়। এর সঙ্গে দায়বদ্ধতার প্রশ্ন জড়িত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement