উপকূলের জেলাতে জমির আলেই সব্জি

উপকূলের জেলাগুলি বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর হাওড়ার কিছু এলাকায় সব্জি চাষের সমস্যা হল-

Advertisement

শুভদীপ নাথ

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১৭
Share:

উপকূলের জেলাগুলি বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর হাওড়ার কিছু এলাকায় সব্জি চাষের সমস্যা হল,

Advertisement

১) উঁচু জমির অভাব।

২) চাষযোগ্য জমিতে নোনা ভাব।

Advertisement

৩) বর্ষায় প্লাবনে নোনা জল চাষের জমিতে ঢুকে পড়া।

তাই এই সব জেলাতে বর্ষায় ধান ও শীতে নোনা মাটিতে কিছুটা তুলো ও অপেক্ষাকৃত ভাল জমিতে ডালশস্য আর বিক্ষিপ্ত সব্জির চাষ প্রচলিত। বলা বাহুল্য এতে লাভ বিশেষ হয় না। এই প্রতিকূলতা কাটাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ মহকুমায় একটু চওড়া জমির আলে সব্জি চাষ হচ্ছে। কারণ উঁচু আল সহজে ডোবে না। আলের মাটি কুপিয়ে চাষ করলে নোনা জলের ক্ষতিকর প্রভাব বৃষ্টিতে ধুয়ে চলে যায়। তাছাড়া সয়েল কন্ডিশনার সার আলে ‘ব্যান্ড প্লেসমেন্ট’ হওয়ার ফলে নোনা জমির ক্ষারীয় ভাব কেটে সব্জি সুন্দর বাড়ে। মূল নিচু জমিতে যেমন ধান চাষ হচ্ছে, তেমন হোক। এতে চাষিরও মনের শান্তি। উৎপাদনে স্থিতাবস্থাও বজায় থাকবে।

তবে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাষিরা এখন যে ভাবে চাষ করেন, তা অনেকটা প্রথাগত ও শ্রম বেশি। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আলে চাষ করতে হলে—

• ৩-৪ ফুট চওড়া রাখতে হবে।

• আল আগাছামুক্ত করা জরুরি।

• সয়েল কন্ডিশনার (ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম জনিত কৃষিচুন/ ক্যালম্যাগস) সার প্রয়োগ করতে হবে। শ’ফুটের আলে এই সার কেজি পাঁচেক। সঙ্গে আধ কেজি হিউমিক দানা ও প্রথাগত ইউরিয়া/ডিএপি বা ১০:২৬ সারের অর্ধেক দেবেন।

• যে কোনও সব্জির রোগ সহনশীল হাইব্রিড জাত বাছতে হবে। প্রাক গ্রীষ্ম বা গ্রীষ্মে সব্জি হিসাবে ভেন্ডি, বেগুন, লঙ্কা দু’সারি আর বর্ষায় ঝিঙে, বরবটি, করলা এক সারি (চওড়া আলে দু’সারি) মাচার ব্যবস্থা রেখে লাগান। শীতে কপির ক্ষেত্রে ‘জিগজ্যাগ’ আকারে দু’সারি ও টোম্যাটো দু’সারি বাঁশের ঠেকনার ব্যবস্থা করে লাগানো যেতে পারে।

• সব্জির বাড়বৃদ্ধির সময় চাপান সার আলে দেওয়া কষ্টসাধ্য। এক্ষেত্রে বর্তমানের অাধুনিক জৈব তরল ১.০: ২.৬: ২.৬ এন পি কে লিটারে ৫ মিলির সঙ্গে ১ মিলি হিউমিক তরল দিয়ে স্প্রে করুন।

• ফুলজালি এলে বায়োজিব্বারেলিক হরমোন ৫ মিলি প্রতি ২০ লিটারে হিউমিক তরল লিটারে ১ মিলির সঙ্গে স্প্রে করলে ফলন ভাল হবেই।

লেখক: মুর্শিদাবাদের সহ-উদ্যানপালন অধিকর্তা। যোগাযোগ: ৯৪৭৪৫৭৮৬৭১।ছবি: চন্দন মণ্ডল, নিমপীঠ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন