কুসংস্কার: কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
সাপে কাটা রোগীকে ঝাড়ফুঁক করাতে গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বহু দেরি। রোগীকে বাঁচানো যায়নি। আত্মীয়দের তখনও বিশ্বাস, মৃতকে জীবিত করার ক্ষমতা ওঝার আছে। তাই সরকারি হাসপাতালেই ওঝা ডেকে ফের শুরু হল ঝাড়ফুঁক!
সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালে আধ ঘণ্টা ধরে চলল মৃতদেহে সুচ ফুটিয়ে মন্ত্র পড়া। হাসপাতালের তরফে কেউ বাধা দেননি! পরে সংবাদমাধ্যম ছবি তুলতে থাকায় ওঝা চম্পট দেন। ঘটনাটা শুনে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের প্রশ্ন, “এত বড় অবৈজ্ঞানিক ঘটনা সরকারি হাসপাতালের মধ্যে ঘটে গেল, কোনও কর্মী তাতে বাধা দিলেন না?’’
সাপে কাটা মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে হাসপাতাল চত্বরে কী করে এমন ঘটল, সেই প্রশ্ন খোদ দফতরের কর্মীদেরও। হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্র মান্ডি দাবি করছেন, এমনটা যে ঘটছে, জানতেই পারেননি। তাঁর কথায়, “স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের সামনে এমন ঘটতে পারে, ভাবতেই পারছি না।’’ রবিবার ভরতপুর থানার মধুপুর গ্রামে সাপে ছোবল মারে বড়ঞার কুসুম ঘোষকে। প্রথম কয়েক ঘণ্টা কিছুই হয়নি। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়ির লোক ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করান। শেষমেশ যখন হাসপাতালে আনা হয়, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
সকাল মর্গে ঢোকানোর আগে দেহটি বহির্বিভাগের পাশে রাখা হয়েছিল। তখনই আত্মীয়রা হিজলের হরিদেবপুর থেকে ওঝা মহিদুল শেখকে ডেকে আনেন। মৃতার বাঁ হাতের তর্জনীতে সুতো বেঁধে, দু’টি বড় সুচ দিয়ে আঙুলের মাথা ফুটো করে চলে মন্ত্র পড়া! পরে মৃতার জ্যাঠা সুখেন ঘোষ বলেন, “ওঝা বলেছিল, মেয়েটাকে বাঁচিয়ে দেবে। তাই একটা চেষ্টা করতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পারল কই!’’