Recruitment Scam

প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা: পরীক্ষক নিয়োগ কি নিয়ম মেনে হয়েছিল?

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের একটি মামলায় অভিযোগ উঠেছে যে, চাকরির ইন্টারভিউয়ে শিক্ষকতার বোধ পরীক্ষার (অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট) জন্য নম্বর দেওয়া হলেও ওই ধরনের কোনও পরীক্ষা নেওয়াই হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৯
Share:

পরীক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে বলে আইনজীবী মহলের খবর। প্রতীকী ছবি।

প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি এবং অনিয়মের কথা সামনে এসেছে। কিন্তু সেই চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ যাঁরা নিয়েছিলেন সেই পরীক্ষকদের নিয়োগ কি নিয়ম মেনে হয়েছিল? এই প্রশ্ন এ বার উঠতেই পারে। কারণ, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে ৩০ জন পরীক্ষক যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানেই পরীক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে কার্যত বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে বলে আইনজীবী মহলের খবর।

Advertisement

ওই ৩০ জনের বেশির ভাগই কোর্টে জানিয়েছেন যে, পরীক্ষক হিসাবে নিয়োগের কোনও লিখিত আদেশনামা তাঁদের দেওয়া হয়নি। কাউকে ফোন করে কিংবা কাউকে মেসেজ পাঠিয়ে পরীক্ষক হতে বলা হয়েছিল। কয়েক জন অবশ্য পরীক্ষক হওয়ার পরিচয়পত্র পেয়েছিলেন। কেউ আবার ইন্টারভিউ পর্ব শেষ হওয়ার পরে ‘অন ডিউটি’ থাকার চিঠি পেয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, ওই পরীক্ষকদের বয়ান থেকে এ-ও উঠে এসেছে যে, কী ভাবে ইন্টারভিউ নিতে হবে তারও কোনও নির্দিষ্ট লিখিত নির্দেশিকা (গাইডলাইন) দেওয়া হয়নি। জেলা প্রাথমিক সংসদের কর্তারা অনেককে মৌখিক ভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অনেককে আবার শুধু বলা হয়েছিল যে, ১০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নিতে হবে। পর্ষদের নির্ধারিত পদ্ধতি না-জানানোয় ‘নিজেদের বিচারবুদ্ধি’ অনুযায়ী ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে বলেও বয়ানে উঠে এসেছে।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের একটি মামলায় অভিযোগ উঠেছে যে, চাকরির ইন্টারভিউয়ে শিক্ষকতার বোধ পরীক্ষার (অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট) জন্য নম্বর দেওয়া হলেও ওই ধরনের কোনও পরীক্ষা নেওয়াই হয়নি। সেই মামলাতেই ৩০ জন পরীক্ষককে হাই কোর্টে তলব করে ২১ ফেব্রুয়ারি রুদ্ধদ্বার কক্ষে জবানবন্দি নেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই ৩০ জন পরীক্ষকের মধ্যে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত, দুই গোত্রের শিক্ষকেরাই ছিলেন। জবানবন্দিতে উঠে এসেছে যে, শিক্ষকতার মানসিকতা বা বোধের পরীক্ষা নেওয়ার কথাই বেশির ভাগ পরীক্ষককে বলা হয়নি। শুধু মৌখিক পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছিল। ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য তিন জন করে পরীক্ষক ছিলেন। এ ক্ষেত্রে পর্ষদের নির্দেশিকা না থাকলেও কোনও কোনও পরীক্ষক অবশ্য শিক্ষকতার বোধ পরীক্ষার জন্য দু’-একটি প্রশ্ন করেছিলেন। যেমন, ছোটদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে কী ভাবে পড়ানো হবে বা শ্রেণিকক্ষ কী ভাবে সামলাতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু ব্ল্যাক বোর্ড, চক, ডাস্টার ব্যবহার করে নিয়মমাফিক শিক্ষকতার বোধ পরীক্ষা বলতে যা বোঝায়, তা হয়নি। বহু পরীক্ষা কেন্দ্রে সে সবের বালাইও ছিল না।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন