—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এসএসসির বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য যে রায় দিয়েছেন, তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়েরের আবেদন জানাল রাজ্য এবং এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন)। মামলা দায়রের অনুমতি দিল বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার এই আবেদনের শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশও।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৫ হাজার ৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়। তাঁরা সকলেই ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেলভুক্ত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য শিক্ষা দফতর। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, এসএসসি-র ২০২৫-এর ওই বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপন্থী। ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের নির্দেশ, কোনও ‘দাগি বা চিহ্নিত অযোগ্য’ প্রার্থী যদি ইতিমধ্যেই আবেদন করে থাকেন, সেই আবেদনপত্র বাতিল করতে হবে। হাই কোর্ট স্পষ্টতই জানিয়ে দেয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে গত ৩০ মে যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি, তাকে সামনে রেখেই নিয়োগপ্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। বিজ্ঞপ্তির বাকি অংশে আদালত হস্তক্ষেপ করেনি।
মামলাকারীদের দাবি ছিল, প্রায় ৪৪ হাজার শূন্যপদের যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, তা আইনসম্মত নয়। মামলাকারীরা জানিয়েছিলেন, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ‘সিলেকশন’ (বাছাই) প্রক্রিয়া ওই সালের ‘রুল’ অনুযায়ী করতে হবে। এবং ২০১৬ সালের চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে থেকেই তা করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। পাশাপাশি বয়সের ছাড়ের বিষয়টিও নির্দেশ মেনে করা হয়নি বলে দাবি করেন তাঁরা। সোমবার হাই কোর্টে নিজেদের অবস্থান জানায় রাজ্য এবং এসএসসি। তাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কোথাও বলা নেই যে নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবেন না। রাজ্যের আরও যুক্তি ছিল, ‘অযোগ্য’দের চাকরি গিয়েছে। বেতন ফেরত দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এই শাস্তির পরে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়াটা আরও এক শাস্তি। তাই এসএসসি ও রাজ্যের আইনজীবীর সওয়াল, একই অপরাধের জন্য কাউকে দু’বার শাস্তি দেওয়া যায় না।
যদিও এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। বিচারপতি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কমিশনের কাছ থেকে এই ব্যাখ্যা প্রত্যাশিত নয়।’’ তার পরেই হাই কোর্ট জানায়, শুধু ‘দাগি বা চিহ্নিত অযোগ্য’দের নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে বাদ দিতে হবে।
এ বার এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল রাজ্য এবং এসএসসি।