CoronaVirus

আইসোলেশন পরিকাঠামোয় সরকারই ভরসা, প্রস্তুতি নিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২০ ২১:০৮
Share:

করোনাভাইরাসের আতঙ্ক দেশ জুড়ে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ রাজ্যের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেও করোনা-আক্রান্ত এক তরুণ ভর্তি রয়েছেন। লাফিয়ে লাফিয়ে ‘গৃহ-পর্যবেক্ষণ’-এর সংখ্যা বাড়ছে। রাজারহাটে কোয়রান্টিন সেন্টারে ভর্তি ৩৫ জন। এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় সরকারি পরিকাঠামোর উপরেই ভরসা রাখছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি হাসপাতালগুলি ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ তৈরির ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে বলে মনে করছেন চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। এখনও এ রাজ্যে বেসরকারি ল্যাবে করোনাভাইরাসের টেস্ট হচ্ছে না।

Advertisement

করোনাভাইরাসের মোকাবিলা

• এক দিকে সচেতনতা, অন্য দিকে, সরকারি হাসপাতালগুলিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নির্দেশিকা মেনে চিকিৎসার চেষ্টা চালাচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর।

Advertisement

• ২৬টি সরকারি হাসপাতালে মোট ১৮১টি আইসোলেশন বেড তৈরি হয়েছে। আরও আইসোলেশন বেড তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারি হাসাপাতালে সেই তুলনায় এখনও আইসোলেশন বেডের সংখ্যা বাড়েনি। তবে পরিকাঠামো তৈরি রাখার চেষ্টা চলছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। জেলায় জেলায় বেসরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো তৈরি আছে কি না, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের তা দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

• কলকাতার বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে আরএন টেগোর হাসপাতালে ৫টি, মেডিকাতে ৯টি, রুবি হাসপাতালে ২টি, সিএমআরসি-তে ১০টি, বেলভিউতে ১২টি, পিয়ারলেসে ৮টি আইসোলেশন বেড রয়েছে। এ ভাবেই অন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও ৩ থেকে ৫টি করে আইসোলেশন বেড তৈরি রাখার চেষ্টা হচ্ছে।

• রাজ্য সরকারের তরফেও হেল্ফ লাইন চালু হয়েছে। তা হল— ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২, ০৩৩ ২৩৪১ ২৬০০। রয়েছে বেশ কিছু নির্দেশিকাও। যেমন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশ থেকে যদি কেউ ফেরেন, তা হলে তাঁকে কোয়রান্টিন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অথবা তাঁর সংস্পর্শে কেউ এলে তাঁকেও ‘গৃহ-পর্যবেক্ষণ’-এ থাকতে বলা হচ্ছে। এর পাশাপাশি দ্রুত তাঁদের লালারসের পরীক্ষারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আইসোলেশন বেড কি? কী ভাবে থাকবেন রোগীরা?

• কোনও রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ হলে, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।

• তাঁকে যে অ্যাম্বুল্যান্সে আনা হবে তার চালক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরনে থাকবে ‘পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট’(পিপিই) এবং মাস্ক। যাতে যাঁরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসছেন, তাঁরা যেন আক্রান্ত না হন।

• একটি বেড নিয়ে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি হতে পারে। একটি বড় জায়গাতেও আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি হতে পারে। সেখানে একাধিক বেড থাকতে পারে। তবে রোগীদের মধ্যে হু-এর নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট দূরত্ব রাখতে হবে। ভেন্টিলেটেশন ব্যবস্থা থাকতে হবে। যে চিকিৎসক বা চিকিৎসাকর্মীরা ওই রোগীর চিকিৎসা করবেন, তাঁকে পিপিই পরতে হবে। পিপিই এক বার ব্যবহার যোগ্য। একবার ব্যবহার করার পর তা নষ্ট করে দিতে হবে।

করোনাভাইরাসের পরীক্ষাকেন্দ্র

• দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ৫২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসের টেস্ট চলছে। কলকাতায় কেন্দ্রীয় সংস্থা নাইসেড (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস), বেলেঘাটা আইডি এবং এসএসকেএম হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে।

• যে ভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে, সরকারি হাসপাতালে চাপ বাড়ছে, তাতে বেসরকারি ল্যাব অথবা বেসরকারি হাসপাতালেও করোনাভাইরাস টেস্ট হতে পারে। ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ এবং ‘ডিপার্টমেন্ট অব হেল্ফ রিসার্চ’ বেসরকারি ল্যাবের হাতেও টেস্টটি ছাড়তে চায় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

• ন্যাশনাল বোর্ড অব ল্যাবরেটরিজ-এর অধীনে থাকা এমন ৫০ থেকে ৬০ বেসরকারি ল্যাবে এই ধরনের টেস্ট করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। তবে এ রাজ্যে কোনও বেসরকারি ল্যাবরেটরি অথবা হাসপাতালের ল্যাবে করোনাভাইরাসের আপাতত পরীক্ষা হচ্ছে না বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। বৃহস্পতিবার এক সাংবদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্র প্রাইভেট ল্যাবকে পরীক্ষার জন্যে অনুমতি দেওয়ার কথা বলছে। দ্রুত সেই অনুমতি যেন দেয় কেন্দ্র। তা হলে আমরা সেই গাইডলাইন মেনে প্রাইভেট ল্যাব এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে বলব।”

• বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত এক কর্তা বলেন, “আমাদের অনুমতি দিলে নিশ্চয়ই ভাল ভাবে কাজ করব। করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় সব রকমের প্রস্তুতি নিচ্ছি।” এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই মাস্ক, গ্লাভস পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement