সুকান্ত রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে এই প্রথমবার মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন।
আগামী এপ্রিল মাসে কলকাতায় হবে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। করোনার কারণে গত দু’বছর এই সম্মেলন না হওয়ার পরে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন থেকেই বণিক সমাজকে বাংলামুখী করতে উদ্যোগী হয়েছেন। একই সঙ্গে সেই সম্মেলনের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন মমতাই। গত ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের পরে মমতা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।’’ এপ্রিলে মমতার ডাকে মোদীর বঙ্গ সফরের সম্ভাবনা তৈরি হতে না হতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে কলকাতায় কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য আর্জি জানাল রাজ্য বিজেপি। শুক্রবার দুপুরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্ব বাংলার বিজেপি সাংসদরা সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে যান। সেখানেই মোদীর কাছে জানুয়ারিতে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিজেপি সূত্রে খবর, মোদী প্রাথমিক ভাবে সম্মত হলেও কবে, কোথায় তিনি আসতে পারেন সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
সুকান্ত রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে এই প্রথমবার মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজ্যে চলা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সবটাই জানেন তবু আমাদের মুখ থেকে রাজ্যে একভাবে চলা সন্ত্রাসের কথা শুনলেন। কী ভাবে বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন সেটা জানিয়েছি। একই সঙ্গে সন্ত্রাস নিয়ে আদালতের নির্দেশে সিবিআই যে তদন্ত করছে তা যাতে তরান্বিত হয় সে আর্জিও জানিয়েছি।’’ একই সঙ্গে রাজ্যে বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে এবং আদালত সিবিআই তদন্তের যে নির্দেশ দিয়েছে তা যাতে ঠিক ভাবে হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুকান্ত। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে যে ভাবে রাজনৈতিক রঙকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তা আমরা প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছি।’’
প্রধানমন্ত্রীকে জানুয়ারি মাসে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ জানানোর কথা জানালেও সেটা যে এপ্রিলে বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনের আগেই মোদীকে বাংলায় আনার লক্ষ্যেই তা মানতে চাননি সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালিত হচ্ছে দেশে। এ নিয়ে বাংলা ভাষায় একটি পুস্তিকা যাতে কেন্দ্র প্রকাশ করে এবং সেটা প্রধানমন্ত্রী যাতে কলকাতায় গিয়ে প্রকাশ করেন, সে ব্যাপারে কথা হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জয়ন্তী পালন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন মোদী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মমতাও। বিধানসভা নির্বাচনের আগের সেই সরকারি সমারোহে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ওঠা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। সেই স্মৃতি মুছে যাওয়ার আগে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে মোদী ফের কলকাতায় আসবেন কি না তা নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েছে বিজেপি শিবিরেই। রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে এপ্রিলে আসার আগেই একবার মোদী আসুন চাইলেও বাংলার নেতারা এটাও মনে করছেন যে, উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্যান্য রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মুখে জানুয়ারিতে মোদীর সফরের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।