আমেরিকায় গিয়েও নিশ্চিন্তে নেই বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাছে তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগে তাঁর সিংহাসনের দাবিদাররা ঘুঁটি সাজিয়ে ফেলে! বিজেপি সূত্রের খবর, এই আশঙ্কায় আমেরিকা যাওয়ার সময় ওই দাবিদারদের ‘নজরবন্দি’ করে গিয়েছেন দিলীপবাবু। তাঁর ১২ দিনের মার্কিন প্রবাস কালে কারা দিল্লি যাচ্ছেন, সে ব্যাপারে নজর রাখছেন তাঁর বিশ্বস্ত কয়েক জন অনুচর।
বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি, দিলীপবাবুর সিংহাসনের ইদানীং টলমলো অবস্থা। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে পরিষদীয় দলনেতা করে অন্য কাউকে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি করতে উঠে পড়ে লেগেছে দলের একাংশ। এ রাজ্যে এ বছরই প্রথম তিন জন পূর্ণ সময়ের বিধায়ক পেয়েছে বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের চার মাস পরেও এখনও পরিষদীয় দলনেতা ঠিক করতে পারেনি তারা। খড়্গপুর সদর কেন্দ্র থেকে জিতেই দিলীপবাবু জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি পরিষদীয় দলনেতা হতে চান না। বস্তুত, বিজেপি-র ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি অনুসারে পরিষদীয় দলনেতা হলে তাঁর আর রাজ্য সভাপতি থাকা হত না। সেই সময়ে বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক স্বাধীন সরকারকে পরিষদীয় দলনেতা এবং মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে সচেতক করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে দেয় রাজ্য বিজেপি। দলীয় সূত্রের খবর, তার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাদের কড়া ধমক দিয়ে জানিয়ে দেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার কেবল দলের সংসদীয় বোর্ডের আছে। ফলে বিজেপি-র পরিষদীয় দলনেতার বিষয়টি এখনও ঝুলে আছে। দলের একাংশের মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিলীপবাবুকে পরিষদীয় দলনেতা করে দিয়ে রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরাতে চান বলেই আপাতত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছেন।
বিজেপি সূত্রের আরও খবর, এই কৌশলের গন্ধ পেয়েই রাজ্য সভাপতি পদের দাবিদার অনেকে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করেছেন। ফলে দলের কেউ দিল্লিতে বেশি সময় দিলেই তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখছে দিলীপ শিবির। সেই তালিকায় রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সরকার, কোর কমিটির সদস্য শমীক ভট্টাচার্য, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন। বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘দূর! এ রকম হয় নাকি? দিল্লি কেউ যেতেই পারেন! তার জন্য সভাপতি তাঁর উপর নজর রাখবেন কেন?’’