West Bengal News

সিবিআই দফতরে বিক্ষোভ শেষে কর্মীদের ক্ষোভের মুখে কংগ্রেস নেতারা নিজেরাই

সিবিআই-এর অভ্যন্তরীণ টালামাটালের প্রেক্ষিতে পথে নামল কংগ্রেস। কলকাতায় নিজাম প্যালেস চত্বরে বিক্ষোভ সভা করে নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করলেন সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্যরা। কিন্তু, সভা শেষ হওয়ার পরে কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন নেতারাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৫৬
Share:

কলকাতায় নিজাম প্যালেস চত্বরে বিক্ষোভ সভা করে নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতারা।

সিবিআই-এর অভ্যন্তরীণ টালামাটালের প্রেক্ষিতে পথে নামল কংগ্রেস। কলকাতায় নিজাম প্যালেস চত্বরে বিক্ষোভ সভা করে নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করলেন সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্যরা। কিন্তু, সভা শেষ হওয়ার পরে কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন নেতারাই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। প্রায় দেড়টা থেকেই কংগ্রেস কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। তবে সিবিআই দফতরের বেশ কিছুটা দূরেই ব্যারিকেড করে রেখেছিল কলকাতা পুলিশ। ফলে নিজাম প্যালেস চত্বরের মেন গেটের কাছাকাছিই সভা করতে হয় কংগ্রেসকে।

প্রথমে এইআইসিসি সচিব তথা প্রদেশ কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক শুভঙ্কর সরকার, প্রাক্তন সাংসদ তথা সোমেন শিবিরের পরিচিত মুখ সর্দার আমজাদ আলি, মায়া ঘোষ, কৃষ্ণা দেবনাথ এবং ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সভা শুরু হয়। পরে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বাদুড়িয়ার কংগ্রেস বিধায়ক কাজী আবদুর রহিম, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রদেশ কংগ্রেসের জনসংযোগ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীরা একে একে নিজাম প্যালেস চত্বরে পৌঁছন।

Advertisement

সোমেন মিত্র ৩টে নাগাদ পৌঁছন সেখানে। তিনিই ছিলেন শেষ বক্তা। অলোক বর্মা এবং রাকেশ আস্থানাকে যে ভাবে ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে সরকার, সোমেন মিত্র-সহ সব কংগ্রেস নেতারাই তার তীব্র নিন্দা করেন। নরেন্দ্র মোদীকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে আক্রমণ করেন কংগ্রেস নেতারা। সোমেন জানান, রাহুল গাঁধীর নির্দেশে তিনি এই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। জেলা কংগ্রেস কমিটিগুলোকেও বিক্ষোভ সমাবেশ করার নির্দেশ দেন সোমেন।

আরও পড়ুন: অলোক বর্মার বাড়ির সামনে ধৃতেরা আসলে ‘গুপ্তচর’!

নিজাম প্যালেস চত্বরে এ দিন জমায়েত ছিল মেরেকেটে শ’দুয়েকের। কিন্তু পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে জায়গা ছোট হয়ে যাওয়ায় সভাস্থলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ঠেলাঠেলি করে নেতাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন অনেকেই। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ভাষণ বন্ধ করে কর্মীদের থামতে বলেন। কিছুতেই বিশৃঙ্খলা থামছে না দেখে মান্নান শেষে বলেন, ‘‘আমিও অসুস্থ, সোমেন দা-ও অসুস্থ, আপনারা এ রকম করবেন না।’’

তবে এর চেয়েও বেশি অস্বস্তি অপেক্ষায় ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বের জন্য। সভা শেষ হওয়ার পর সোমেন মিত্রের গাড়ি যখন বেরিয়ে যাচ্ছে, তখন নিজাম প্যালেস চত্বরের মেন গেটের ঠিক সামনেই কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সোমেনবাবুর গাড়ির জানালা দিয়েও কথা বলার চেষ্টা করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: ‘২০১৯, বিজেপি ফিনিশ’ ডাক দিয়ে ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ

সোমেন মিত্রের গাড়ি অবশ্য সেখানে বেশি ক্ষণ দাঁড়ায়নি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বেরিয়ে যেতেই আরও চড়ে বিক্ষুব্ধদের সুর। দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেস নেতা তরুণ দেবের নেতৃত্বেই মূলত ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ। গত চার বছর প্রদেশ কংগ্রেস দফতরের ধারেকাছেও দেখা যায়নি যাঁদের, তাঁদের ডেকে এনে কেন ভাষণ দিতে দেওয়া হচ্ছে? এমনই প্রশ্ন তুলে হইহল্লা শুরু করেন তরুণ দেবরা।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, অমিতাভ চক্রবর্তীকে ভাষণ দিতে ডাকা হয়েছিল বলেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন কর্মীদের একাংশ। সভায় বক্তাদের নাম ঘোষণা করছিলেন যিনি, সেই শুভঙ্কর সরকার বললেন, ‘‘আমাকে যাঁদের নাম ঘোষণা করতে বলা হয়েছিল, আমি তাঁদের নাম ঘোষণা করেছি। কে ভাষণ দেবেন, কে দেবেন না, তা আমি স্থির করিনি। তাই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন