West Bengal News

না তৃণমূল, না বাম, একা লড়তে চায় কংগ্রেস, ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন সোমেন

কংগ্রেসকে দুর্বল করেছে তৃণমূলই, তাই তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট নয়— ইঙ্গিত দিয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দু’দিনের বৈঠক ডাকা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সদর দফতরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:০১
Share:

কংগ্রেসকে দুর্বল করেছে তৃণমূলই, তাই তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট নয়— ইঙ্গিত দিয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দু’দিনের বৈঠক ডাকা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সদর দফতরে। প্রথম দিনের বৈঠকের ফাঁকে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। বাংলায় নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতা বুঝে নেওয়ার জন্য একক শক্তিতেই লড়তে চায় কংগ্রেস। জানিয়েছেন সোমেন।

Advertisement

এআইসিসির তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক তথা কলিয়াবরের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের উপস্থিতিতেই মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস বৈঠকে বসেছিল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, চার কার্যনির্বাহী সভাপতি দীপা দাশমুন্সি, আবু হাসেম খান চৌধুরী, নেপাল মাহাতো ও শঙ্কর মালাকার, রাজ্যসভা সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য, কমিটির আহ্বায়ক শুভঙ্কর সরকার, উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর-সহ প্রায় গোটা প্রদেশ নেতৃত্বই হাজির ছিলেন বৈঠকে। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী বৈঠকে ছিলেন না।

দু’দিন ব্যাপী বৈঠকের এটিই ছিল প্রথম দিন। এ দিন ৯টি জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রদেশ নেতৃত্ব ও এআইসিসি পর্যবেক্ষকরা কথা বলেন। জেলায় জেলায় দলের প্রকৃত অবস্থা কেমন, মূলত তা নিয়েই আলোচনা হয় বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘স্বনামধন্য সংগঠক’ বলে খোঁচা, রথযাত্রার প্রস্তুতি বৈঠকে বিজেপির কোন্দল

মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসন নূর যে একাধিক বার প্রকাশ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষে সওয়াল করেছেন, তা কংগ্রেসের প্রদেশ এবং জাতীয় নেতৃত্বের অজানা নয়। সোমেন মিত্র আগেই জানিয়েছিলেন, জোট সংক্রান্ত মতামত মৌসমের ব্যক্তিগত। মৌসমের মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে যে অস্বস্তি রয়েছে, তাও স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল তখনই। স্বাভাবিক ভাবেই এ দিনের বৈঠকে সে মৌসম নূরের কাছে ওই মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হয় বলে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে। মৌসম প্রদেশ নেতৃত্বকে জানান, তিনি তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষে সওয়াল করেননি। তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে। তিনি অনেক কথা বলেছিলেন, কিন্তু তাঁর মন্তব্যের একটি অংশকে তুলে ধরা হয়েছে বলে মৌসম দাবি করেন। বিধান ভবন সূত্রের খবর অন্তত তেমনই।

মৌসমের ব্যাখ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব সন্তুষ্ট কি না, তা নিয়ে বিধান ভবনে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। কারণ বিজেপি-কে হারানোর স্বার্থে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট দরকার— এমন কথা দ্বিধাহীন ভাবেই এর আগে বলতে শোনা গিয়েছিল উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদকে। প্রকাশ্যে অবশ্য সোমেন মিত্র এ দিন মৌসম নূরের পাশেই দাঁড়ান। আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা যে কংগ্রেসের নেই, তাও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানিয়ে দেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘কংগ্রেস দুর্বল হয়েছে যাদের জন্য, যারা আমাদের ঘর ভঙিয়েছে, যারা পুলিশ-প্রশাসন এবং পয়সার লোভ দেখিয়ে কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গায়ে নিজেদের স্ট্যাম্প মারছে, দুর্বলতা তো আমাদের সেখান থেকেই। সেই দুর্বলতা আমাদের কাটিয়ে নিতে হবে। আমি আঁতাত করতে গিয়ে আমার পুরো ঘরটাই ধ্বংস হয়ে যাক, আমি তো তা চাইব না।’’

আরও পড়ুন: ফের বিতর্কিত ভিডিয়ো, ঋতব্রতর পরে শাস্তির মুখে সিপিএমের দুই যুব

বামেদের সঙ্গে জোটেও যে তিনি খুব একটা আগ্রহী নন, সোমেন মিত্র তাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দল একক শক্তিতে লড়াই করবে। তাতে আমরা হারি বা জিতি, আমরা আমাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা মেপে নিতে পারব।’’ তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যে প্রদেশ কংগ্রেস নেবে না, সিদ্ধান্ত যে দিল্লি থেকেই হবে, সে ইঙ্গিতও এ দিন স্পষ্ট ছিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সাংবাদিক বৈঠকে। তিনি বলেন, ‘‘দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, এআইসিসি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই সিদ্ধান্ত আমরা সবাই মেনে নিতে বাধ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন