লগ্নি টানতে সস্তায় জমি

জমির দাম কমিয়ে সোনারপুর হার্ডওয়্যার পার্কে নতুন করে দরপত্র চাইতে চলেছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০১:৩৪
Share:

জমির দাম কমিয়ে সোনারপুর হার্ডওয়্যার পার্কে নতুন করে দরপত্র চাইতে চলেছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

Advertisement

চড়া দাম এবং তলানিতে ঠেকা চাহিদা— এই জোড়া সমস্যার কারণে হার্ডওয়্যার পার্কের জন্য দফায় দফায় বিনিয়োগকারীদের থেকে দরপত্র চেয়েও সাফল্য মেলেনি। প্রায় ১১ একর জমির উপর তৈরি ওই পার্কে বিনিয়োগকারী টানতে দু’বার অনলাইনে জমি নিলাম (ই-অকশন) করেছিল রাজ্য সরকার। সাড়া পাওয়া যায়নি তাতেও। এ দিন ব্রাত্যবাবুও স্বীকার করে নিয়েছেন জমির চড়া দামের কথা। তাঁর দাবি, দাম কমিয়ে এ বার দরপত্র চাওয়া হবে।

জমির জন্য একর প্রতি তিন কোটির কাছাকাছি ‘রিজার্ভ প্রাইস’ ধরা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, এই দাম দেওয়ার মতো চাহিদা নেই পশ্চিমবঙ্গের বাজারে। সমস্যা সামলাতে রাজ্য ঠিক করে, ছ’বছর আগে যাঁরা আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, তাঁদের বিনা দরপত্রেই জমি দেওয়া হবে। কিন্তু তাতেও বিশেষ সাড়া মেলেনি। আপাতত অর্থ দফতরের কাছে জমির দাম কম করার আর্জি জানানো ছাড়া আর কোনও উপায় নেই বলে মনে করছে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর।

Advertisement

২০১০ সালে বাম জমানাতেই হার্ডওয়্যার পার্কের শিলান্যাস হয়। জমি কেনা হয় প্রায় ৯ কোটি টাকা দিয়ে। বছর তিনেক আগে শুরু হয় পার্ক তৈরির কাজ। কিন্তু তার পর পরই প্রায় ১১ একরের পার্কে আইনি জটে জড়িয়ে যায় পাঁচ একরের একটি জমি। জমির ঠিক দাম দেওয়া হয়নি বলে এক জমি মালিক রাজ্যের বিরুদ্ধে মামলা করে। আটকে যায় এই শিল্পতালুকের লগ্নি। সেই মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। তবে, ওই আইনি লড়াইকে সরিয়েই বাকি জমি বিপণন করতে মাঠে নেমেছিল রাজ্য

২০১৫ সালে পার্ক পুরোদমে চালু করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। জায়গা হওয়ার কথা ছিল ২০টি সংস্থার। কিন্তু প্রথমে পরিকাঠামোর অভাব, পরে আইনি সমস্যা— এই দুই কারণে দেরি হয় অনলাইনে জমি নিলামের প্রক্রিয়াতেই। শিল্পমহলের ক্ষোভ, তার পর থেকেই আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা কমতে শুরু করে।

সফট্ওয়্যারে লগ্নি টানার দৌড় দেরিতে শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। সেই ভুল হার্ডওয়্যার শিল্পের ক্ষেত্রে শুধরে নিতে চেষ্টা করেছিল বাম সরকার। আর বর্তমান সরকার আর এক ধাপ এগিয়ে হার্ডওয়্যার শিল্পের তালিকায় নিয়ে এসেছে সৌর বিদ্যুৎ তৈরির যন্ত্রপাতিও। এমনকী, নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতেও এই শিল্পকে বিশেষ জায়গা দেওয়া হয়েছে। তবুও এই শিল্পে দেশের বাজারে রাজ্যের ভাগ প্রায় নেই বললেই চলে।

এই ঘাটতি মেটাতেই হার্ডওয়্যার পার্কের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে এই পার্কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় দশ হাজার কর্মসংস্থান হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন