West Bengal Budget 2023-24

রাজনীতি আর অর্থনীতির অঙ্ক সামলানোই লক্ষ্য, বুধবার বাজেট পেশ করতে চলেছেন চন্দ্রিমা

অদূরের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং বছরখানেক দূরের লোকসভা ভোটের দরুন এ বারের বাজেটে রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকবেই বলে মনে করছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:০৩
Share:

বুধবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করবেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।

পরের বছর লোকসভা নির্বাচন তো আছেই, সর্বোপরি পঞ্চায়েত ভোট শিয়রে। এটা যদি রাজনীতির দিক হয়, অর্থনীতির দিক থেকে আছে নড়বড়ে ভাঁড়ার নিয়ে সামাজিক কল্যাণ প্রকল্প চালিয়ে যাওয়া, ঋণের বোঝা সামলানো ইত্যাদি। এই রাজনীতি আর অর্থনীতির অঙ্ক সামলানোর লক্ষ্য নিয়েই আজ, বুধবার ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, অর্থ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সামনে এটা চ্যালেঞ্জ নিশ্চয়ই। তার থেকে বড় কথা, এই বাজেট তৃণমূল সরকারেরই পরীক্ষা।

Advertisement

অদূরের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং বছরখানেক দূরের লোকসভা ভোটের দরুন এ বারের বাজেটে রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকবেই বলে মনে করছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞেরা। তদুপরি কোষাগারের সঙ্গিন পরিস্থিতিও রয়েছে ভাবনার গভীরে। সীমিত আয়ের মধ্যে বাড়তে থাকা খরচ, ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং রাজকোষের ঘাটতি চিন্তায় রেখেছে সরকারকে। রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্থির করে দেওয়া বিধির চাপও।

বিগত কয়েক বছরে সামাজিক কল্যাণ খাতে উল্লেখযোগ্য হারে বরাদ্দ বাড়িয়েছে তৃণমূল সরকার। তৃতীয় বার সরকারে ফিরে লক্ষ্মীর ভান্ডার, নতুন কৃষকবন্ধু, পড়ুয়া ঋণকার্ড ও স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। চলছে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সাইকেল ও ট্যাব বিতরণ, নিখরচায় রেশন, ভাতা-সহ বিভিন্ন প্রকল্প। ভোটের আগে সামাজিক কল্যাণ ক্ষেত্রে বরাদ্দ কাটছাঁট করা কার্যত অসম্ভব। তা ছাড়া বেতন-পেনশন, ঋণ শোধ, প্রশাসনিক খরচ, দফতর-ভিত্তিক বরাদ্দের মতো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেও খরচ জুগিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক। অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, রাজস্ব-ঘাটতির ফলে আয় তেমন ভাবে বাড়েনি। তাই ঋণ নেওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা যায়নি। ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন।

Advertisement

আর্থিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, আগের অবস্থান থেকে সরে এখন বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থের সুবিধা পেতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজের মতো গ্রামীণ প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে টানাপড়েনে সমস্যা বেড়েছে। উপরন্তু কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কার মানলে তবেই রাজ্য ৩.৫% পর্যন্ত রাজকোষ-ঘাটতি রাখতে পারবে। নইলে তা নামিয়ে আনতে হবে তিন শতাংশে। তথ্য বলছে, গত কয়েক বছরে রাজ্যের রাজকোষ-ঘাটতি ক্রমশ বেড়েছে। চলতি আর্থিক বছরের (২০২২-২৩) বাজেটে তা ৩.৬৪ শতাংশে ধরে রেখেছিল রাজ্য। রাজনৈতিক কারণে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সংস্কারের বিষয়টি মানা সম্ভব না-হলে রাজকোষ-ঘাটতি তিন শতাংশে নামিয়ে আনাটাও খুব বড় পরীক্ষা। সে-ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার পরিধি যেমন কমতে পারে, সমস্যা হতে পারে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন