মেধা আগলে রাখতে স্কুলেই চাকরির দিশা

বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ ও দিল্লি-সহ বিভিন্ন শহরে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের একটা বড় অংশ এ রাজ্যের। পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এই মেধাসম্পদের টান টের পেয়েছে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি

শুধু বিদেশে নয়, বাংলার মেধা লাগাতার পাড়ি দিচ্ছে ভিন্‌ রাজ্যেও। ‘রাজ্যে থাকো’, অন্যত্র পড়তে গেলেও রাজ্যে ফিরে এসো’ ইত্যাকার অনুরোধ-উপরোধে কাজ বিশেষ হচ্ছে বলে মনে করছে না প্রশাসনও। তাই ‘ব্রেন ড্রেন’ ঠেকাতে এ বার স্কুল স্তর থেকেই রীতিমতো চাকরির আশ্বাস দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নবম শ্রেণি থেকেই স্কুলপড়ুয়াদের চাকরির দিশা দেখাতে আসরে নেমেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। পড়ুয়াদের কার কোন বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে, তা জেনে তাদের ভবিষ্যতের দিশা দেখানোর গুরু দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের। কর্মসংস্থানমুখী এই পড়াশোনার জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ করে ফেলেছে ওই দফতর। বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ প্রকল্প রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযানের আওতায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ ও দিল্লি-সহ বিভিন্ন শহরে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের একটা বড় অংশ এ রাজ্যের। পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এই মেধাসম্পদের টান টের পেয়েছে। এ বার আইআইটি জয়েন্টের মেধা-তালিকার প্রথম পঞ্চাশে বাংলার দুই পড়ুয়া জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু দু’জনেই ভিন্‌ রাজ্যে পড়তে যাচ্ছেন। শিক্ষামহলের মতে, শুধু পড়াশোনার টানে নয়। ভিন্‌ রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগও টানছে পড়ুয়াদের। নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিল্প চাই। চাকরির সুযোগ তৈরি করতে পারলে তবেই এমন কর্মসূচি সফল হবে।’’ একই সুর বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা যাতে কাজের সুযোগ পায়, সেটাও রাজ্য সরকারের দেখা উচিত।’’

Advertisement

স্কুলশিক্ষা দফতরের দাবি, বাংলার মেধা যাতে বাইরে চলে না-যায়, সেই জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা সব সময়েই পড়ুয়াদের পাশে থাকবেন। এ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যে উচ্চশিক্ষা সম্ভব, সেই ইতিবাচক দিশা দেখাবেন তাঁরা। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, পড়ুয়াদের সমস্ত ইতিবাচক সম্ভাবনার যথাযথ প্রয়োগের দিকে নজর দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। বাইরে থেকে কিছু চাপিয়ে না-দিয়ে যে-ছাত্র বা ছাত্রীর মধ্যে যে-বিষয়ে সম্ভাবনা এবং আগ্রহ রয়েছে, তার ভিত্তিতেই চাকরির দিশা দেখানো হবে।

মেধা ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে আমলার সংখ্যা বাড়ানোও এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রী দরদি আমলা চান, যাঁরা নিজের রাজ্যে কাজ করবেন। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, আমলা হয়ে ওঠার পরীক্ষার জন্য মাধ্যমিকের আগে থেকেই প্রস্তুতি চালানো দরকার। সেই জন্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হবে, কার কার মধ্যে সেই প্রবণতা রয়েছে। গত বছর এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। এ বছর তার রূপায়ণ শুরু হচ্ছে বলে জানান ওই শিক্ষাকর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement