Election Commission

সাসপেন্ড নয়, নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে এক আধিকারিককে সরাল নবান্ন! তদন্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ, জানাল কমিশনকে

কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্য জানিয়েছে, ঘটনার প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে কমিশনকে জানিয়েছে রাজ্য।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ১৮:০২
Share:

কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। —নিজস্ব চিত্র।

নির্বাচন কমিশন বলেছিল চার আধিকারিককে নিলম্বিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করতে হবে। এ ছাড়া এক ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’-এর বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করতেও বলেছিল। তবে এখনই সেই পথে হাঁটছে না রাজ্য সরকার। আপাতত ওই পাঁচ জনের মধ্যে দু’জনকে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ এবং এক আধিকারিক। বাকিদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। সোমবার কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল নবান্ন।

Advertisement

প্রথমে ৫ অগস্ট রাজ্যকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল কমিশন। পরে ৮ অগস্ট ফের চিঠি পাঠায় তারা। দ্বিতীয় চিঠিতে রাজ্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলেছিল কমিশন। সেই মতো ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই কমিশনকে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার।

সোমবার কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যসচিব জানান, আপাতত পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের ‘সহকারী নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক’ (এইআরও) সুদীপ্ত দাস এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ সুরজিৎ হালদারকে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য আরও জানিয়েছে, ঘটনার প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে কমিশনকে জানিয়েছে রাজ্য।

Advertisement

ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের জেরে রাজ্যের চার সরকারি আধিকারিককে নিলম্বিত করার কথা বলে সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের চার সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা এবং বিভাগীয় তদন্ত শুরুর নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দু’জন ‘নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক’ (ইআরও) এবং দু’জন এইআরও। এ ছাড়া বারুইপুর পূর্বের ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামেও এফআইআর দায়ের করতে বলেছিল কমিশন।

বারুইপুর পূর্বের ইআরও এবং এইআরও হিসেবে কাজ করছিলেন দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী এবং তথাগত মণ্ডল। ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ওই দুই দায়িত্বে ছিলেন বিপ্লব সরকার ও সুদীপ্ত দাস। সূত্রের খবর, বারুইপুর পূর্ব এবং ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকার কাজ যাঁদের তত্ত্বাবধানে চলছিল, সেই দু’জন ইআরও রাজ্য ক্যাডারের (ডব্লিউবিসিএস) অফিসার। ওই দুই ইআরও এবং বারুইপুর পূর্বের এইআরও-র বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ করছে না নবান্ন।

কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে মুখ্যসচিব লিখেছেন, সরকারি আধিকারিকদের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে হয়। তার উপর নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বও থাকে, যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয়। এ অবস্থায় অনেক ক্ষেত্রেই সরল বিশ্বাসে অধস্তনদের উপর কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁরা ধারাবাহিক ভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে আসছেন। এমন ক্ষেত্রে বিস্তারিত অনুসন্ধান ছাড়াই কোনও সিদ্ধান্ত নিলে, তা তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ হয়ে যেতে পারে। এমন সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ওই আধিকারিকদের ক্ষেত্রেই নয়, সার্বিক ভাবে সরকারি আধিকারিকদের হতাশ করতে পারে। তাই প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে, এক এইআরও এবং এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হচ্ছে বলে কমিশনকে জানিয়েছে রাজ্য।

রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কমিশন চিঠি পাঠানোয় সম্প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের এক সভা থেকে কেন্দ্র এবং কমিশনকে একযোগে নিশানা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি কারও কোনও পানিশমেন্ট (শাস্তি) হতে দেব না।’’ নির্বাচনের অনেক দেরি থাকা সত্ত্বেও কমিশন কেন অতিসক্রিয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। নাম না করে কমিশনকে ‘বিজেপির বন্ডেড লেবার (ক্রীতদাস)’ বলেও আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement