বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সিকিমের পরে বঙ্গ!

রাজ্যের পরিবেশ দফতরের এক কর্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক গড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়। তার বড়জোর ১০ শতাংশ পুনর্ব্যবহার করা হয়। বাকিটা ডাঁই করা হয় ভাগাড়ে। ফলে ভাগাড়ের জমি যেমন প্রতিদিন কমছে, বেড়ে যাচ্ছে দূষণের আশঙ্কাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৭
Share:

দিল্লি, কেরল, মহারাষ্ট্র তো পিছনে ফেলে দিয়েছেই। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পশ্চিমবঙ্গের থেকে এগিয়ে গিয়েছে ছত্তীসগঢ়, ত্রিপুরা, সিকিম, গোয়ার মতো ছোট রাজ্যগুলিও!

Advertisement

রাজ্যের পরিবেশ দফতরের এক কর্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক গড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়। তার বড়জোর ১০ শতাংশ পুনর্ব্যবহার করা হয়। বাকিটা ডাঁই করা হয় ভাগাড়ে। ফলে ভাগাড়ের জমি যেমন প্রতিদিন কমছে, বেড়ে যাচ্ছে দূষণের আশঙ্কাও।

রাজ্যের নগরোন্নয়ন ও পরিবেশ দফতর এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ একসঙ্গে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার পথ খুঁজছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। পরিবেশমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘বর্জ্যের বিপদ সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী মিলিত ভাবে কাজ করার কথা বলেছেন। আমরা শীঘ্রই এই নিয়ে বৈঠকে বসব।’’ পরিবেশ দফতর সূত্রের জানা গিয়েছে, উত্তরপাড়া এবং দীর্ঘাঙ্গী মৌজাকে কেন্দ্র করে গোটা ছয়েক পুরসভা বর্জ্য-সমস্যা সামাল দেওয়ার কাজটা ঠিকমতো করছে।

Advertisement

দিনের পর দিন ভাগাড়ে জঞ্জাল ডাঁই করার পরিণাম কী হতে পারে, কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় তাকালেই সেটা বোঝা যায়। দীর্ঘদিনের ভাগাড় ধাপা বন্ধ হতে চলেছে। ভাগাড়ের জমি খুঁজতে প্রশাসনের একাংশ নজর দিচ্ছে পূর্ব কলকাতার জলাভূমির দিকে। শহরের উপকণ্ঠে প্রমোদনগর ভাগাড়ও ক্রমশ বুজে আসছে। শিলিগুড়ির ভাগাড়ের পরিস্থিতিও তথৈবচ। ‘‘বড় শহরগুলির কাছেপিঠে ভাগাড় তৈরির কোনও জমিও মিলছে না,’’ বললেন পরিবেশ দফতরের এক কর্তা।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, আগে চন্দননগর-সহ কয়েকটি পুরসভা বিচ্ছিন্ন ভাবে এই কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু তা-ও এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিবেশবিদেরা বলছেন, ভাগাড়ে জমা বর্জ্য থেকে মিথেন গ্যাস নির্গত হয় এবং তা থেকে আগুন জ্বলে ধোঁয়া ছড়াতে শুরু করে। ফলে আশপাশের হাওয়ায় বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে। প্রমোদনগর এলাকার বাসিন্দা এই বিপদ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। এখনও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে গেলে কটু গন্ধ পাওয়া যায়।

পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তার মতে, জৈব ও অজৈব বর্জ্য পৃথকীকরণের উপরে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া উচিত। পৃথকীকরণের পরে অজৈব বর্জ্যকে কম্প্যাক্টরে ফেলে নিংড়ে আয়তন কমালে বর্জ্যের সামগ্রিক পরিমাণ কমবে।

‘‘কোনও পুরসভা যদি নিজেরা বর্জ্য পৃথকীকরণ ও পুনর্ব্যবহার করতে চায়, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সেই কাজে সাহায্য করবে,’’ বলছেন পরিবেশমন্ত্রী। তাঁর দফতরের খবর, বর্জ্য সামাল দিতে কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ভাবা হচ্ছে নতুন প্রযুক্তির যন্ত্র ব্যবহারের কথা। কয়েকটি পুরসভাকে নিয়ে একত্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপন ব্যবস্থা তৈরি করা হবে কিছু এলাকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন