প্রতীকী ছবি।
এক দিকে ক্রমাগত লোকসান তো অন্য দিকে ঋণের বোঝা! দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে পশ্চিমবঙ্গের নম্বর ক্রমশ কমেই চলেছে বিদ্যুৎ বণ্টনে। কেন্দ্র সম্প্রতি গোটা দেশের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির উপরে সমীক্ষা চালিয়ে ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের যে-তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের স্থান হয়েছে ১৯!
কেন্দ্রের বিচারে দক্ষতার মাপকাঠিতে ওই তালিকার প্রথম তিনটি স্থান গুজরাতের বণ্টন সংস্থাগুলির দখলে। তাদের ক্ষতির হার গড়ে ১০% ছাড়ায়নি। ১০০% বিল আদায় করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের সংস্থাগুলি প্রতি বারের মতো অন্যদের প্রতিযোগিতায় পিছনে ফেলে দিয়েছে।
আর ঠিক এই দু’টি ক্ষেত্রেই হেরে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বিদ্যুৎ চুরি আটকানোয় ঘাটতি তো আছেই। তার উপরে বিল ঠিকমতো আদায় করা যাচ্ছে না। ফলে গত আর্থিক বছরে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার গড়ে ক্ষতি হয়েছে ২৯%। বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষতির পরিমাণ বাড়লে ব্যাঙ্কগুলিও ঋণ দিতে চায় না।
৪১টি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার উপরে সমীক্ষা চালিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রক গ্রেড-ভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করেছে। সংস্থাগুলির অন্যান্য আর্থিক দিকের সঙ্গে সঙ্গে ‘এগ্রিগেট, টেকনিক্যাল অ্যান্ড ট্রান্সমিশন লস’ (এটিসি লস) বা লোকসান খতিয়ে দেখা হয় সমীক্ষায়। দেখা যায়, ২০১৫-’১৬ ও ২০১৬-’১৭ সালে লোকসানে পশ্চিমবঙ্গে কোনও হেরফের হয়নি। বিল আদায় বাড়েনি। স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে ‘বি-প্লাস’ পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
তবে বিদ্যুৎ পরিষেবা ক্ষেত্রে নতুন পরিকাঠামো তৈরি-সহ তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর কিছু পরিষেবা চালু করে সংস্কারের পথে হেঁটেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। তার জেরে চার ধাপ উঠে এসেছে তারা। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের বিচারে গত বছর কেন্দ্রের প্রকাশিত তালিকায় ‘বি’ গ্রেড নিয়ে ২৩ নম্বরে ছিল বাংলা। এ বছর ‘বি-প্লাস’ পেয়ে ১৯ নম্বরে উঠে এসেছে।