চিকিৎসায় গাফিলতির দায়ে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক ভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। শাস্তির সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে দ্বারস্থ হচ্ছেন অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক উষা গোয়েনকা ও শ্যামল সরকার।
দুর্ঘটনায় আহত ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায় ভছরখানেক আগে মারা যান। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল ইএম বাইপাসের অ্যাপোলো হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক উষা গোয়েনকা এবং শল্যচিকিৎসক শ্যামল সরকারের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক ভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বেসরকারি হাসপাতালের একাংশ শুক্রবার জানায়, ওই শাস্তির বিরুদ্ধে দুই চিকিৎসক কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানাচ্ছেন।
যকৃতের রক্তনালি ফেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল ভীষণ ভাবে। সেই ক্ষরণ রুখতে যে-‘এম্বোলাইজেশন’ বা সেলাই দেওয়ার কথা, সেটা করা হয়নি। বার করা হয়নি পেটে জমাট বাঁধা প্রায় আড়াই লিটার রক্ত। চিকিৎসায় এই গাফিলতির জেরে মারা যান ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়। সেই গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় অ্যাপোলোর দুই চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক ভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় কাউন্সিল।
চিকিৎসক শিবির সূত্রের খবর, অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক ঘনিষ্ঠ মহলে জানান, রেজিস্ট্রেশন বাতিল সংক্রান্ত কাউন্সিলের নির্দেশপত্র এখনও তাঁদের হাতে পৌঁছয়নি। সেই নির্দেশপত্র পেলে আগামী সপ্তাহেই তাঁরা হাইকোর্টে যাবেন।
মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক সদস্য জানান, কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত আগেও একাধিক বার হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসকেরা কখনও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, আবার কখনও স্বাস্থ্যসচিবের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবেদন করেছেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলে। তবে সঞ্জয়-কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক আদালতের পথ বেছে নিচ্ছেন।
উষা-ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক শিবিরের একাংশ জানাচ্ছেন, তাঁরা বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়ে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। তাই আর স্বাস্থ্য
ভবনের শীর্ষ কর্তার কাছে না-গিয়ে সরাসরি আদালতে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ, বিচারাধীন অবস্থায় কাউন্সিল তাদের শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে পারবে না। আদালতে আবেদন করার পরেই কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যাবে।
এই তৎপরতার ব্যাপারে উষাদেবী বা শ্যামলবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা উত্তর দেননি। অ্যাপোলো হাসপাতালের তরফেও কেউ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।