Hindmotor

রোগী-মৃত্যুতে বিভ্রান্তি, মার ডাক্তারকে

হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসায় অনুমোদিত নার্সিংহোমে অন্য চিকিৎসক থাকতে পারেন না।’’ নার্সিংহোমের কর্ণধার, চিকিৎসক দেবাশিস সরকারের দাবি, ‘‘কোনও অনিয়ম হয়নি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা|

হিন্দমোটর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০৩:০৯
Share:

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক গণেশ চৌধুরীকে মার রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র

একই নার্সিংহোমে দুই চিকিৎসকের দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্রে সময় দু’রকম! এক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক লিখেছেন, ‘রোগীর মৃত্যুর সময় সকাল ৬টা’। অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক লিখেছেন, ‘রাত আড়াইটে’!

Advertisement

এই বিভ্রান্তির জেরে রবিবার হুলস্থুল হল হিন্দমোটরে এক নার্সিংহোমে। মৃত দিলীপ সরকার (৫৭) উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁর মৃত্যুর সময় নিয়ে বিভ্রান্তিতে চিকিৎসককে মার, ভাঙচুর, রাস্তা অবরোধ— কিছুই বাদ যায়নি। প্রশ্নও উঠেছে, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক কী করে মৃত্যুর শংসাপত্র দেন। কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।

হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসায় অনুমোদিত নার্সিংহোমে অন্য চিকিৎসক থাকতে পারেন না।’’ নার্সিংহোমের কর্ণধার, চিকিৎসক দেবাশিস সরকারের দাবি, ‘‘কোনও অনিয়ম হয়নি।’’

Advertisement

শনিবার গভীর রাতে কোতরংয়ের উদয়ন পল্লির বাসিন্দা দিলীপবাবুকে ওই নার্সিংহোমে আনা হয়। কর্তব্যরত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক গণেশ চৌধুরী তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখেন, ‘সকাল ৬টায় দিলীপবাবু বাড়িতে মারা গিয়েছেন’। পরে নার্সিংহোমের কর্ণধার তথা চিকিৎসক দেবাশিস সরকার যে শংসাপত্র দেন, তাতে মৃত্যুর সময় লেখা— ‘রাত আড়াইটে’। এ নিয়ে মৃতের আত্মীয় ও স্থানীয়দের সঙ্গে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বচসা বাধে। শুরু হয় বিক্ষোভ। অভিযোগ ওঠে, গণেশবাবুর যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তিনি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করছেন। পুলিশ গণেশবাবুকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে মারধর করে। অভিযোগ, দেবাশিসবাবুকেও মারা হয়। ভাঙচুর চলে নার্সিংহোমে। পরে জি টি রোড অবরোধ করে জনতা। নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে পোস্টার সাঁটা হয়।

নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, রাত আড়াইটে নাগাদ দিলীপবাবুকে আনার সঙ্গে সঙ্গে ইসিজি করে দেখা যায়, তিনি মারা গিয়েছেন। নার্সিংহোমের তরফে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু প্রচুর লোক জড়ো হয়ে মৃত্যুর শংসাপত্র চাইলে বাধ্য হয়েই গণেশবাবু তা দেন। তিনি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হওয়ায় অন্যকে দিয়ে শংসাপত্র দেওয়ার দাবি উঠলে দেবাশিসবাবু তা লেখেন।

গণেশবাবুর দাবি, ‘‘ইমার্জেন্সির উপরে অ্যালোপ্যাথিক কোর্স করেছি। ডেথ সার্টিফিকেট দিতেই পারি।’’ গণেশবাবুর প্যাডে লেখা, ‘এই প্রেসক্রিপশন মেডিকো-লিগ্যাল বিষয়ে প্রযোজ্য নয়’। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার মতে, ‘‘পুরোটাই গোলমেলে। এ ভাবে দায় এড়ানো যায় না।’’ উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব জানান, সোমবার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে পুরসভায় ডাকা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন