রাজ্যের শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনেই এ সব হচ্ছে, ঘনিষ্ঠ মহলে বেশ উষ্মা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল চিত্র।
ছোটখাটো অনুষ্ঠান নয়। সমাবর্তনে আমন্ত্রিতের তালিকা রীতিমতো আন্তর্জাতিক। সাম্মানিক ডিলিট দেওয়া হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ডিলিট প্রাপকের তালিকায় রয়েছে শর্মিলা ঠাকুরের নামও। এমন এক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ এখনও পাননি স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তৃণমূলের ইচ্ছাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই আচরণ, ইঙ্গিত মন্ত্রীর। তৃণণূলের বিরুদ্ধে ‘চূড়ান্ত অসৌজন্যমূলক’ আচরণের অভিযোগ তুলে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন বাবুল।
আসানসোলের কাজি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ মে বিশেষ সমাবর্তনের আয়োজন হয়েছে। শেখ হাসিনাকে সেই অনুষ্ঠানেই সাম্মানিক ডিলিট দেওয়া হবে। শর্মিলা ঠাকুর সম্ভবত যোগ দিতে পারছেন না অনুষ্ঠানে। তবে, হাসিনা কাজি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে যোগ দেবেন বলে বাংলাদেশ সরকার জানিয়ে দিয়েছে। কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হাসিনার সফরসূচি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশদ আলোচনাও সেরে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই।
‘ফিল গুড’ আবহের তাল কেটেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথা রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে ওঠা ‘অসৌজন্যের’ অভিযোগ। অভিযোগ তুলেছেন আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো হাই-প্রোফাইল অতিথি যোগ দিচ্ছেন, অথচ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ তিনি পাননি! বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
অনুষ্ঠানের সেই আমন্ত্রণপত্র
অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র হিসেবে যে কার্ড ছাপানো হয়েছে, তাতে শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। নাম রয়েছে বাংলার রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নাম রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়র নাম কোথাও নেই। এমনকী বাবুল এখনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার আমন্ত্রণও পাননি।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার ফের সেলিমের ছেলেকে তলব করল সিআইডি
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহলে বেশ উষ্মা প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় নয়, রাজ্যের শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনেই এ সব হচ্ছে, ইঙ্গিত বাবুলের মন্তব্যে। তিনি বলেন, ‘‘এঁরা রাজনীতিকে কলঙ্কিত করছেন। আমি সৌজন্য দিয়েই আমার রাজনীতি শুরু করেছিলাম। নববর্ষে তৃণমূলের মঞ্চে গিয়ে গান গাওয়াই হোক বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি খাওয়া, সবই আমার সৌজন্যেরই অঙ্গ ছিল। বাকিটা এঁদের মনের সঙ্কীর্ণতা এবং দৈন্য।’’
আসানসোলের বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আসছেন, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এখনও আমন্ত্রণ পাননি শুনে এলাকার মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানাচ্ছেন, বাবুল সুপ্রিয়কে আমন্ত্রণ জানানো হবে। উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘সাংসদকে অবশ্যই আমন্ত্রণ জানানো হবে। সময় মতোই আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে যাবে।’’