অনিমেষ সাহা
ছেলের অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়েই টোটো নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছতেই জানা গেল সব শেষ। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলা ওই বাস্কেটবল খেলোয়াড় অনিমেষ সাহার (১৮) বাবার অভিযোগ, প্র্যাকটিসের মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ছেলে। কিন্তু তাঁর শুশ্রূষায় গাফিলতি করেছে পূর্ব বর্ধমান ভলিবল-বাস্কেটবল সংস্থা। বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। যদিও অভিযোগ মানেনি ওই সংস্থা।
বিবেকানন্দ কলেজের কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র অনিমেষ বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের বালিডাঙার বাসিন্দা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় দলের হয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে সে। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার বিকেলেও বর্ধমানের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে বাস্কেটবল প্র্যাকটিসে গিয়েছিল। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তাঁর বাবা অশোকবাবু ছেলের অসুস্থতার খবর পান। প্রায় এক ঘণ্টা পরে অশোকবাবু নিজের টোটোয় ছেলেকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানান। তাঁর অভিযোগ, তিনি না যাওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও করা হয়নি। তাঁর আরও দাবি, ঘটনার সময় মাঠে ছিলেন বর্ধমান জেলা ভলিবল-বাস্কেটবল সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বনবিহারী যশ। তারপরেও দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়নি। শুক্রবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ মর্গে অনিমেষের ময়নাতদন্ত হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন মৃতের মামা নারায়ণ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘অনিমেষ জেলা দলের নিয়মিত সদস্য। যাঁদের হয়ে খেলছিল তাঁরা একটু সচেতন হলেই হয়তো ছেলেটা বেঁচে যেত।’’
বনবিহারীবাবুর অবশ্য দাবি, ছেলেটি দিব্যি প্র্যাকটিস করছিল। হঠাৎ মাথা ব্যথা করছিল বলে বসে পড়ে। তারপর বমি করতে শুরু করে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গিয়ে জল দিই। মিনিট পনেরোর মধ্যেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেরনো হচ্ছিল। তখনই ওঁর বাবা আসেন।’’ তাঁর আরও দাবি, টুর্নামেন্ট চলাকালীন অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিৎসক থাকেন। তবে প্র্যাকটিসের সময় ডাক্তার থাকেন না। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার বন্দোবস্ত থাকে। যদিও অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমি ঘণ্টাখানেক পরে স্টেডিয়ামে পৌঁছেছি। ওরা হাসপাতালে যাওয়ার তোড়জোড় করেনি।’’ এ দিন দুপুরে অরবিন্দ স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায় অনিমেষের স্মৃতিতে সমস্ত খেলা বন্ধ।