অস্ত্রোপচারে অন্ধ, নালিশ বিষ্ণুপুরে

বছর তেতাল্লিশের পার্বতীর বাঁ চোখে মাংসপিণ্ড তৈরি হওয়ায় সমস্যা হয়েছিল। তিনি জানান, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রামে চক্ষু পরীক্ষা করতে এসেছিল।

Advertisement

শুভ্র মিত্র

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

অপেক্ষা: সুবিচারের আশায় পার্বতী হেমব্রম। —নিজস্ব চিত্র।

কাছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। জেলাতেই রয়েছে মেডিক্যাল কলেজ। অথচ গ্রামে চক্ষু শিবির করাতে আসা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সরকারি স্বাস্থ্য বিমার কার্ডের অধিকারী এক মহিলাকে অস্ত্রোপচার করতে পাঠিয়েছিলেন বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের বটডাঙা গ্রামের পার্বতী হেমব্রমের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের গাফিলতিতেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে তাঁর। তদন্ত চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ তাঁর পরিবার।

Advertisement

বছর তেতাল্লিশের পার্বতীর বাঁ চোখে মাংসপিণ্ড তৈরি হওয়ায় সমস্যা হয়েছিল। তিনি জানান, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রামে চক্ষু পরীক্ষা করতে এসেছিল। পার্বতীর রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ড রয়েছে জেনে তাঁরা বিষ্ণুপুর শহরে কবিরাজ পাড়ায় ওই চক্ষু হাসপাতালে গিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে বলেন। ৯ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচার করা হয়।

সমস্যার শুরু এর পর। পার্বতীর অভিযোগ, ‘‘প্রথমে বাঁ চোখে ঝাপসা দেখছিলাম। হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে গেলে আশ্বাস দিয়েছিল, ঠিক হয়ে যাবে। উল্টে দিন দিন দৃষ্টিশক্তি চলে যায়। বাঁকুড়া মেডিক্যাল ও পরে কলকাতা মেডিক্যালে যাই। জানতে পারি, চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর স্বামী চন্দ্র হেমব্রম বলেন, ‘‘ওদের শাস্তি চাই। তাই শুক্রবার বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ স্বামী হৃদ্‌রোগী। তাই পার্বতীই সংসার চালাতেন। সেই আয়েই দুই ছেলে পড়াশোনা করত। চোখ হারিয়ে পার্বতীর কাজে যাওয়া বন্ধ। বড় ছেলে তাই কলেজ ছেড়ে এখন কাজের সন্ধান করছেন। ওই চক্ষু হাসপাতালের কর্ণধার শুক্লা পাত্রের দাবি, ‘‘বাঁকুড়া মেডিক্যালের সেরা চিকিৎসক পার্বতীর অস্ত্রোপচার করেন। রোগী চোখের যত্ন না নেওয়ায় সংক্রমণ হয়েছে। অনেকেরই এখানে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কিন্তু কেউ এমন অভিযোগ করেননি।’’ যদিও বিষ্ণুপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলছেন, ‘‘ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ উঠেছিল। জেলা প্রশাসন নির্দেশ দিলে তদন্ত করা হবে।’’ মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডলেরও আশ্বাস, ‘‘গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’’

Advertisement

স্বস্তি পাচ্ছেন না পার্বতী। ইদানীং তাঁর ডান চোখেও ব্যথা শুরু হয়েছে। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘ওই চোখটাও নষ্ট হয়ে যাবে না তো?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন