পঞ্চায়েত ভোট পর্ব সাঙ্গ হয়েছে। এখন হাত-পা ছড়িয়ে বসার সময় নেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তা ও কর্মীদের। কারণ, কার্যত প্রতিদিনই নানান অভিযোগ আসছে কমিশনে।
অভিযোগকারীদের মধ্যে আছেন অনেক প্রার্থীও। তাঁদের অনেকেই সহযোগীদের নিয়ে সটান চলে আসছেন কমিশনে। গণনা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন। আবার কখনও আদালতে মামলা হওয়ায় ‘রিট’-এর আকারে তা আসছে কমিশনের দফতরে। এই ধরনের মামলার ফাইল ক্রমেই বাড়ছে। ভোট পর্ব সাঙ্গ হলেও গণনাকেন্দ্রিক অভিযোগে জেরবার হতে হচ্ছে কমিশনের কর্তাদের।
১৭ মে পঞ্চায়েত ভোটের গণনা ছিল। তা নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ করেছিল রাজনৈতিক দলগুলি। কোথাও অভিযোগ ছিল, পুনর্গণনার দাবি উঠলেও রিটার্নিং অফিসার তাতে কর্ণপাত করেননি। আবার কোথাও এক প্রার্থী জিতলেও তাঁর পরিবর্তে পরাজিত প্রার্থীকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে! গণনার সময় ব্যালট বক্স থেকে অতিরিক্ত ব্যালট পেপার পাওয়ার অভিযোগ কম নয়। কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্যের এক মন্ত্রীও জঙ্গলমহলের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে গণনা নিয়ে কমিশনের কাছে দরবার করেছেন। সেখানে নির্দল প্রার্থীর কাছে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। আবার দু’-একটি ক্ষেত্রে গণনার বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে কমিশনকে বলা হয়েছে, তাঁরা যেন বিষয়টি একটু ‘দেখেন’!
২১ মে ভোট পর্ব শেষ হয়েছে। অথচ গণনার নিয়ে এত অভিযোগ কেন, তা নিয়ে চর্চা চলছে কমিশনের অন্দরে। এক কর্তা বলেন, ‘‘গণনা নিয়ে কিছু কিছু অভিযোগ আসছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। দরখাস্ত এসেছে। সবই রেখে দেওয়া হচ্ছে।’’ কমিশনের খবর, গণনা নিয়ে অভিযোগ এলেও তাঁদের কিছু করার নেই বলে কর্তারা সব ক্ষেত্রেই আবেদনকারীকে জানিয়ে দিচ্ছেন। সব অভিযোগই অবশ্য ‘যত্ন’ করে রেখে দিচ্ছে কমিশন। গণনা সংক্রান্ত পাঁচটি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সব ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে, এই ধরনের বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই।
ভোট বিশেষজ্ঞদের মতে, গণনায় হাইকোর্টের কিছু করার না-থাকলেও অভিযোগকারীরা জেলা আদালতে ‘ইলেকশন পিটিশন’ করার সুযোগ পাবেন। পুরুলিয়ায় গণনার দু’দিন পরে একটি জেলা পরিষদের আসনে পুনর্গণনা হয়েছিল। তাতে বিজেপির বদলে আসনটি পায় তৃণমূল।