পাশে: মাজার পুনর্নির্মাণ ডিপোপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
পাড়ায় দীর্ঘকাল ধরে পাশাপাশি রয়েছে মন্দির, মাজার। গত বুধবার রাতে, গোলমালের সময় সেই মাজার ভেঙে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই মাজারেরই পুনর্নির্মাণ করছে মন্দিরের অছি পরিষদ। তার সদস্যরাই ঠিক করছেন, মাজারের গাঁথনি কেমন হবে, টাইলস কী বসবে।
এই ছবি আসানসোলের রেলপাড়ার। সেই রেলপাড়া, শিল্পাঞ্চলে সাম্প্রতিক গোলমালের শুরু যেখানে। রেলপাড়ার ডিপোপাড়ায় কয়েক ঘর সংখ্যালঘু পরিবারের বাস। ওই পাড়াতেই আছে দক্ষিণাকালীর মন্দির। অদূরে মাজার। আছে কাশিম খানের মোটর গ্যারাজ ও মহম্মদ ইসমাইলের সাইকেল সারাইয়ের দোকান। বুধবার গোলমালের রাতে ওই দোকান দু’টিও পুড়ে যায়। কাশিমরা দ্বারস্থ হন মন্দিরের অছি পরিষদের কর্ণধার মলয় মজুমদারের। তিনি আশ্বস্ত করেন, ‘‘দু’টো দিন যাক। কিছু একটা হবেই।’’ এর পরে মলয়বাবু, রঞ্জিত দে সরকার, তাপস মুখোপাধ্যায়দের মতো পরিষদের সদস্যেরা ঠিক করেন, মন্দিরের টাকাতেই সারাই হবে।
শনিবার রাত থেকেই শুরু হয় কাজ। দোকান গ়়ড়া, সারাইয়ের প্রয়োজনীয় যন্ত্র কেনা, মাজার পুনর্নির্মাণ, সবই চলছে সংস্থার টাকায়। রবিবার সারাইয়ের তদারকি করা মলয়বাবু বললেন, ‘‘ওঁদের প্রায় দু’দশকের দোকান। বিপদে-আপদে সবাই জোট বেঁধে থাকি। এটাই স্বাভাবিক।’’ এটাই এলাকার ঐতিহ্য, জানালেন পাশে দাঁড়ানো মাজার দেখভালের দায়িত্বে থাকা মহম্মদ মৌলা, কাশিম, ইসমাইলেরা। একটা আক্ষেপ অবশ্য যাচ্ছে না রঞ্জিতবাবুদের। গোলমালের খবর পেয়ে বুধবার রাত ১টা পর্যন্ত তাঁরা এলাকা পাহারা দিলেও থামানো যায়নি অশান্তি।
তবে নিজেদের জীবন-জীবিকা ‘বাঁচাতে’ পেরেছে রানিগঞ্জের রামবাগান। মিলেমিশে রাত-পাহারা দিচ্ছেন সমাজকর্মী জ্যোতি সিংহ, দোকানি মহম্মদ পারভেজ, রাজেশ তারবেরা। বলেন, ‘‘গোলমালের আঁচ পড়তে দেব না পাড়ায়, শপথ নিয়েছিলাম।’’