নিজেদের অধিকাংশ ছাপাখানায় ঝাঁপ ফেলে বাইরে থেকে টিকিট ছাপানোর উদ্যোগের পরে বেসরকারিকরণের পথে আরও এগোতে চাইছে রেল। স্টেশন ঝাঁট দেওয়া থেকে ধোয়ামোছা তো বটেই, রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে দিয়ে দিচ্ছে তারা। বিনিময়ে স্টল ভাড়া দিয়ে এবং প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি করে আয় করবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা।
নতুন পাইলট প্রজেক্টের আওতায় আপাতত দেশের ছ’টি স্টেশনকে পরীক্ষামূলক ভাবে ১৫ বছরের জন্য বেসরকারি সংস্থার হাতে লিজে তুলে দিতে চাইছেন রেল-কর্তৃপক্ষ।
প্রথম ধাপে পুণে, বেঙ্গালুরু, সেকেন্দরাবাদ, দিল্লির আনন্দবিহার, চণ্ডীগড় ও ভোপালের হাবিবগঞ্জ স্টেশনে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে। ভাল ফল মিললে ধাপে ধাপে দেশের অন্যান্য স্টেশনেও ওই পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হবে। রেল-কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লিজ বাবদ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে টাকা তো মিলবেই। সেই সঙ্গে লোক-লশকর নিয়ে স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণের ঝক্কি থেকেও মুক্তি পাবে রেল।
রেল সূত্রের খবর, সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট বিক্রি, সিগন্যালিং এবং ট্রেন চালানো ছাড়া বাকি সব দায়দায়িত্বই বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে। স্টেশন-চত্বরে স্টল, বিল-বোর্ড বা হোর্ডিং ভাড়া দেওয়া, ট্রেন চলাচলের সময় ঘোষণা থেকে ডিসপ্লে বোর্ডের রক্ষণাবেক্ষণ-সহ সব কিছুই করবে ভারপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থা।
রেলের এক কর্তা জানান, অনর্থক বিভিন্ন বিভাগে অজস্র কর্মী নিয়ে কাজ করার বদলে রেল তার কাজের ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সীমায়িত করতে চায়। সংস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতা আমদানি করার পাশাপাশি নির্ঝঞ্ঝাট লাভের দরজা খুলতেই এই নতুন ভাবনা।
রেলকর্তাদের একাংশের দাবি, স্টেশন লিজ দেওয়ার ভাবনা নতুন নয়। এর আগেও কিছু কিছু বড় মাপের স্টেশন ৪৫ বছরের লিজে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তেমন সাড়া না-মেলায় ওই লিজের শর্ত কিছু রদবদল করা হচ্ছে। লিজের মেয়াদ ৯৯ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্টেশন সংলগ্ন জমি বেসরকারি সংস্থাকে বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যায় কি না, দেখা হচ্ছে সেটাও। বিনিময়ে বেসরকারি সংস্থা স্টেশনে উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব নেবে।