রাজ্যকেই বাড়তি জমি বেচবে রেল

রেললাইন সম্প্রসারণ-সহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে জমি নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যে রাজ্যে তার অনেকটাই এখন উদ্বৃত্ত। নিজেদের হাতে থাকা কয়েক হাজার কোটি টাকার সেই উদ্বৃত্ত জমি বাজারমূল্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারের কাছে বিক্রি করে দিতে চাইছে রেল।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৩
Share:

রেললাইন সম্প্রসারণ-সহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে জমি নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যে রাজ্যে তার অনেকটাই এখন উদ্বৃত্ত। নিজেদের হাতে থাকা কয়েক হাজার কোটি টাকার সেই উদ্বৃত্ত জমি বাজারমূল্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারের কাছে বিক্রি করে দিতে চাইছে রেল।

Advertisement

প্রথম দফায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৩টি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছেন রেল বোর্ডের সদস্য (ইঞ্জিনিয়ারিং) এম কে গুপ্ত। ওই চিঠিতে রাজ্যগুলিকে জমির চাহিদা খতিয়ে দেখে ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম)-এর কাছে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্ঘে রেলের তরফে সংশ্লিষ্ট ‘জোন’ বা অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজারদের চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী যাতে দ্রুত জমি হস্তান্তর করা যায়, তার জন্য ডিআরএম-দের নির্দেশ দিতে হবে।

রেল সূত্রের খবর, জমি নেওয়া হয়েছিল মূলত রেলপথের গেজ পরিবর্তনের জন্য। কিন্তু নানা কারণে রেলপথের অভিমুখ বদলানোয় অনেক জমি আর কাজে আসেনি। উদ্বৃত্ত জমির মধ্যে অসম এবং উত্তরপ্রদেশে রেলের এমন জমিও রয়েছে, যা ১৮৯৩-’৯৪ সালে নেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৩টি রাজ্যে রেলের হাতে ১২০৬৫ একর উদ্বৃত্ত জমি রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে যে-সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি লেখা হয়েছে, সেগুলি হল উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাব, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাত, তামিলনাড়ু, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ।

Advertisement

“উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে জমির গুরুত্বের কথা বুঝেই বিভিন্ন রাজ্য ‘ল্যান্ড ব্যাঙ্ক’ বা জমি ব্যাঙ্ক গড়ার দিকে ঝুঁকছে। রেলের অব্যবহৃত জমি রাজ্যের ল্যান্ড ব্যাঙ্কে যুক্ত হলে তা নানা কাজে ব্যবহৃত হতে পারে,” বলেন এক রেলকর্তা। ‘ল্যান্ড-পার্সেল’ হিসেবে রেল ওই জমি রাজ্যগুলিকে হস্তান্তরিত করবে ‘জেনারেল ফিনান্সিয়াল রুল’ বা জিএফআর মেনে। ওই আইন অনুসারে কেন্দ্রের হাতে থাকা অব্যবহৃত জমি রাজ্যেকে দেওয়া যায়। তবে অবশ্যই বাজারদরের বিনিময়ে। ওই জমির বদলে অন্যত্র সমমূল্যের জমি রেলকে ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগও রয়েছে। এর আগে ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে তাদের উদ্বৃত্ত জমি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কাছে বেচে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল রেল। রেলের অধীনে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকেও ওই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সারা দেশের ৩০০টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার হাতে প্রায় ১০ লক্ষ একর উদ্বৃত্ত জমি রয়েছে।

রেলকর্তাদের একাংশ অবশ্য মনে করেন, কোষাগারের হাল ফেরাতেই বাড়তি জমি হস্তান্তরের এই উদ্যোগ। সম্প্রতি স্টেশনগুলির উদ্বৃত্ত জমিতে বাণিজ্যিক নির্মাণের সূত্রে স্টেশন উন্নয়নের জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করতেও তৎপর হয়েছে রেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন