তার আগমন নিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচল ছিল ষোলো আনা। শেষ পর্যন্ত আরব সাগরে জেগে ওঠা ঘূর্ণিঝড় ‘মেকুনু’ নির্দিষ্ট সময়ের তিন দিন আগেই মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দিল মৌসুমি বায়ুকে।
কেরল দিয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে বর্ষা ঢোকার কথা ১ জুন। দিল্লির মৌসম ভবনের খবর, মঙ্গলবার সকালেই বর্ষা কেরল দিয়ে ঢুকে পডেছে। আর শুধু ঢুকে পড়াই নয়, তা ছড়িয়ে পড়েছে ওই রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। শুরু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি।
আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছিল ইয়েমেন আর ওমান। ওমানে শনিবার এক দিনে যা বৃষ্টি হয়েছে, তা সেখানে তিন বছরের বৃষ্টিপাতের থেকে বেশি। আরব সাগরের মতিগতি ও বায়ুপ্রবাহ দেখে আবহবিদদের একাংশ ঘোষণা করেছিলেন, ওই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আগেই কেরল দিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়তে চলেছে বর্ষা। হলও তা-ই। কেরল থেকে পূর্ব ভারতে পৌঁছতে বর্ষা সময় নেয় সাত দিন। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঢোকার কথা ৮ জুন। এক আবহবিদ জানান, যে-সব পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে কেরল থেকে বর্ষা উপরের দিকে ওঠে, এ বার সেগুলি অনুকূল রয়েছে।
গ্রীষ্মের যথেষ্ট দাপট না-থাকায় জোরদার তাপবলয় তৈরি হচ্ছিল না। তবে দেরিতে হলেও উত্তর, মধ্য, উত্তর-পশ্চিম এবং পশ্চিম ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহের সৃষ্টি হয়েছে। তা বর্ষাকে কেরল থেকে উপরের দিকে টেনে আনতে সাহায্য করবে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদদের অনেকেই। মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহোয় তাপমাত্রা প্রায় ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছে। পশ্চিম রাজস্থান, মধ্য মহারাষ্ট্র, বিদর্ভ, গুজরাতের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৪৬ ও ৪৭ ডিগ্রির মধ্যে। এগুলি বর্ষার স্বাভাবিক গতির অনুকূল বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা।
তবে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে এখন পারদ যতটা ওঠা উচিত, তা ওঠেনি। বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং আসালসোল-দুর্গাপুর অঞ্চলে তাপপ্রবাহ হয়নি। তাপমাত্রা তেমন ওঠেনি বিহার, ঝাড়খণ্ড ওড়িশাতেও। তাই তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, ওড়িশা হয়ে পূর্ব ভারতে ঢোকার সময় বর্ষার ছন্দ বজায় থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আবহবিদদের অনেকেই।