দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তা থেকে কালিম্পঙের ডম্বর চক কিংবা লাভা-লোলেগাঁওয়ের প্রায় সব হোটেল, হোম স্টে ভর্তি। কোথাও জায়গা মেলাই ভার। তার উপরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে পুলিশ-প্রশাসন ও নিরাপত্তা রক্ষীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। ফলে, হোটেল, সরকারি-বেসরকারি অতিথি নিবাসে ঘর পেতে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদেরও। পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, আগাম কারও বুকিং থাকলে তা যেন কোথাও বাতিল না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই সমতলের যে অফিসারেরা ‘ভিআইপি ডিউটি’তে যাচ্ছেন, তাঁরা অনেকেই পুলিশ ব্যারাক, ‘ব্যাচমেটের কোয়াটার্র’-এ ঠাঁই খুঁজছেন।
তবে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সুরক্ষা বলয়ে একদম গোড়ায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের থাকার ব্যবস্থা আগেই হয়েছে। কারণ, জিটিএ দাবি করছে, সফরের কথা আগাম জানা থাকায় ডেলোর বাংলোয় ২৫ মে থেকে ১ জুন অবধি পর্যটকদের বুকিং নেওয়া হয়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য বেসরকারি গাড়ি বেশি বাজেয়াপ্ত করা হলে পর্যটকেরা সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন মালিকরা।
ইতিমধ্যেই দার্জিলিঙের লাক্সারি ভেহিক্যালস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তের কাছে লিখিত ভাবে তা জানিয়েছে সংগঠন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক বলেছেন, ‘‘ওঁরা আমাকে জানিয়েছিলেন, ১০০টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেটা ঠিক নয়। আমি বিশদে খোঁজ নিয়ে ওঁদের জানিয়েছি। গোটা দশেক গাড়ি আমরা ভাড়ায় নিয়েছি। এতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, ওই গাড়িগুলি তো ভাড়াতেই দেওয়া হয়।’’
জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত ট্যুর অপারেটররা। দার্জিলিঙের ট্যুর অপারেটর সংগঠনের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক ঝাঁক শীর্ষ আমলা, পুলিশের প্রথম সারির অফিসারদের থাকার কথা। সে জন্য শহরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ হবে। ট্যুর অপারেটরদের আর্জি, ভিআইপিদের জন্য পর্যটকদের শহরে ও লাগোয়া এলাকায় ঘোরাফেরায় যেন বিধিনিষেধ আরোপ করা না হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ভরা মরসুমে মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিং কিংবা কালিম্পং শহরে থাকছেন না। শহর থেকে দূরে অপেক্ষাকৃত নির্জন ডেলোয় থাকার কথা তাঁর। সে জন্য শহরে ঘোরাফেরায় কোনও বিধিনিষেধ আরোপের প্রশ্ন আপাতত উঠছে না।
পুলিশ সূত্রের খবর, আগামী সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর কালিম্পঙে যাওয়ার কথা। তিনি সরাসরি ডেলোয় জিটিএ-র বাংলোয় উঠবেন। পরদিন পাহাড়ের উন্নয়ন বোর্ডের প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তার পরের দিন জিটিএ-র প্রতিনিধি ও প্রশাসনিক অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করবেন। পরদিন শিলিগুড়িতে ফেরার কথা তাঁর।