বিশ্বভারতীতে চরম বিশৃঙ্খলার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীই।
বিশ্বভারতীর অব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জলের অব্যবস্থা, বিক্ষোভ, নিরাপত্তা ভেঙে মঞ্চে যুবকের উঠে আসা— সব মিলিয়ে গত কালের অনুষ্ঠানে যে চরম বিশৃঙ্খলার ছবিটি ফুটে উঠেছে, তাতে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
প্রচণ্ড গরমে এবং জলের অভাবে গত কাল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। ধৈর্য হারিয়ে বিক্ষোভ দেখান অনেকে। বিশ্বভারতী এমন একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যার আচার্য খোদ প্রধানমন্ত্রী। তাই গত কালের অব্যবস্থার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়ে নেন খোদ প্রধানমন্ত্রীই। বিষয়টি মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তাই বিশৃঙ্খলার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য মন্ত্রকের উচ্চ শিক্ষা দফতরের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যমের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্র জানায়, অব্যবস্থার কারণ খুঁজতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্ত্রক কর্তারা।
বিশ্বভারতীর যুক্তি, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সমাবর্তন না হওয়ায় গত কাল প্রায় ৭ হাজার স্নাতক উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তার কারণে অনুষ্ঠান শুরুর বেশ কিছু ক্ষণ আগে ছাত্রছাত্রী, এবং অভ্যাগতদের অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছে আসন নিতে হয়। এক দিকে চড়া গরম, অন্য দিকে নিরাপত্তার কারণে অনুষ্ঠান স্থলে জলের বোতল নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি প্রধানমন্ত্রীর এসপিজি। বসানো যায়নি জলের ট্যাঙ্কারও। পরিস্থিতি সামলাতে প্রায় ছয় হাজার জলের পাউচের ব্যবস্থা করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, তা প্রয়োজনের তুলনায় বহু কম। ফলে জল নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ির কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। অব্যবস্থা নিয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘‘কেন এমন হল, কোথায় গন্ডগোল হল, তা খতিয়ে দেখছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।’’
প্রশ্ন উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার সময়ে সিটি দেওয়া থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ওঠা নিয়েও। কারা ওই কাজ করেছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখছে বিশ্বভারতী। সূত্রের খবর, শেষ দিনে বিজেপি নেতানেত্রীদের জন্য প্রায় ১৫০ কার্ড ইস্যু করতে হয় বিশ্বভারতীকে। রাজ্য বিজেপির বহু নেতানেত্রী ছাড়া যে কার্ড বিলি করা হয় বিজেপি কর্মীদের কাছে। সন্দেহ, ওই বিজেপি কর্মীরাই ‘মোদী মোদী’, ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়ে বিতর্ক বাধান।