সরকারি হাসপাতালের ওষুধ নিয়ে ফের নতুন তালিকা প্রকাশ হতে চলেছে। প্রায় দু’হাজার নতুন ওষুধ সংযোজিত হচ্ছে সেই তালিকায়। ওষুধ নিয়ে রোগীদের হেনস্থা কমাতে বর্ধিত তালিকা তৈরি হচ্ছে নবান্নের শীর্ষ মহলের নির্দেশ মেনেই।
বঙ্গবাসীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার অঙ্গ হিসেবে সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বছরখানেক আগে সেই সিদ্ধান্তে কিছু রদবদল হয়। স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, নিখরচার ওষুধের অপব্যবহার হচ্ছে। তাই সব হাসপাতালে সব ধরনের ওষুধ থাকবে না। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ থাকবে মহকুমা, জেলা বা সুপার স্পেশ্যালিটির মতো বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালে। কিন্তু এর জেরে রোগীরা সমস্যায় পড়েন।
সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন হাসপাতালে কী ধরনের ওষুধ থাকবে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন জরুরি ওষুধেও টান পড়ে। ওষুধ বিতরণে রাশ টানায় রোগীরা বিপাকে পড়ছিলেন। কোথাও কোথাও কার্ডিয়োলজি বিভাগ থাকা সত্ত্বেও অ্যাঞ্জিয়োগ্রামের দরকারি ওষুধ পাওয়া যাচ্ছিল না। আবার কোথাও হেমাটোলজির জীবনদায়ী ওষুধ না-থাকায় রোগীর প্রাণসংশয় হচ্ছিল না। অন্য সরকারি হাসপাতাল থেকে যোগাযোগ করে ওষুধ নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তার কাছে সেই খবর পৌঁছয়। এর পরেই ওষুধে রাশ টানার নীতি বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, রোগীর কাছে ওষুধের বিকল্প বাড়াতেই সরকারি হাসপাতালে নতুন ওষুধের তালিকায় আরও দু’হাজার ওষুধ যোগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওষুধের তালিকায় বিশেষ পরিবর্তন হচ্ছে না। জেলা, বিশেষত কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হৃদ্রোগ, রক্ত, স্নায়ুর মতো একাধিক রোগের ওষুধের ক্ষেত্রে যাতে কোনও জটিলতা তৈরি না-হয় সে-দিকে খেয়াল রেখেই ওষুধের তালিকা বাড়ানো হয়েছে। এর পরেও কোনও সরকারি হাসপাতালের রোগী নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ না-পেলে সেটা জোগাড় করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ওষুধ নিয়ে যাতে কোনও রকম হয়রানি না-হয়, সে-দিকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
‘‘প্রশাসনের শীর্ষ কর্তার নির্দেশ মেনেই ওষুধের বর্ধিত তালিকা নবান্নে পাঠানো হয়েছে। দিন দুয়েকের মধ্যেই নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে,’’ বলেন স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা।