১, ৩ এবং ৫ মে, তিন দফায় পঞ্চায়েত ভোট

কমিশন জানিয়েছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৫ কোটি ৮ লক্ষ। ২০টি জেলার ৫৮ হাজার ৪৬৭টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে দফাওয়ারি দিনক্ষণ কী ভাবে ঠিক হয়েছে— এই প্রশ্নের জবাব দেননি কমিশনার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৫
Share:

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ঘোষণা হয়ে গেল ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ। ভোট হবে তিন দফায়— ১, ৩ এবং ৫ মে। ফলপ্রকাশ হবে ৮ মে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

মে-দিবসে ভোট হওয়ায় অনেকে বিস্মিত। যদিও সরকারের দাবি, মে-দিবসে ভোট হবে না, এমন কথা কোথাও বলা নেই। পরের দিন ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে।

এ দিন ভোটের সবিস্তার নির্ঘণ্ট জানিয়ে প্রথমে বিজ্ঞপ্তি জারি করে পঞ্চায়েত দফতর। সেই বিজ্ঞপ্তি হুবহু মেনে নিয়ে কমিশনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেয়। ফলে ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে কমিশন-নবান্ন যে বিবাদের আশঙ্কা ছিল, তাতে কার্যত মাঠে মারা যায়।

Advertisement

কমিশন জানিয়েছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৫ কোটি ৮ লক্ষ। ২০টি জেলার ৫৮ হাজার ৪৬৭টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে দফাওয়ারি দিনক্ষণ কী ভাবে ঠিক হয়েছে— এই প্রশ্নের জবাব দেননি কমিশনার। অমরেন্দ্রবাবুর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার সব জানে।’’ প্রশ্ন ওঠে, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া এই ভোট হবে কী করে? জবাব এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আজ কোনও প্রশ্ন-উত্তর নয়। ভেবেচিন্তে পরে বলব।’’

গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। রাজ্যের প্রস্তাবিত নির্ঘণ্ট মেনে ভোট করাতে রাজি হননি মীরা। রাজি হননি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট করাতেও। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ২০ হাজার জওয়ানের উপস্থিতিতেই ভোট হয়েছিল পাঁচ দফায়।

এ বারও প্রাথমিক ভাবে পাঁচ দফায় ভোট চেয়েছিল কমিশন। কিন্তু রাজ্য এক দফায় ভোটের প্রস্তাব দেয়। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা যাবে না বুঝতে পারার পরে তিন দফা ভোটে রাজি হয় রাজ্য।

তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এখনও নারাজ রাজ্য। তারা পুলিশ দিয়েই ভোট করাতে চায়। কিন্তু কী ভাবে সেই বাহিনী মোতায়েন হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্যের হাতে রয়েছে ৪৫ হাজার সশস্ত্র বাহিনী, কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই তা মোতায়নের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে নবান্নের দাবি। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে প্রতি বুথে এক জন করে সশস্ত্র পুলিশ দেওয়া হবে।’’

কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণতন্ত্র রক্ষা গণতন্ত্র দিয়েই হয়। স্বৈরতন্ত্র দিয়ে হয় না। ভোট শান্তিপূর্ণ হোক চাই। কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আমরা তা করি না।’’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘জানতাম, সরকারের শর্ত মেনেই খেলতে হবে। কিন্তু ভোটের নির্ঘণ্টেই প্রমাণিত, সরকার গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করছে। আদালতে যাওয়া যায় কি না ভাবা হবে।’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র টুইট করেছেন, ‘আপনি আপনার গণৎকারের পরামর্শ অনুযায়ী ১ মে নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করতে পারেন। কিন্তু মে দিবস শুধু ১ মে-ই উদ্‌যাপিত হবে আর রক্তপতাকা পতপত করে উড়বে, হয়তো যে প্রাসাদে আপনি অধিষ্ঠান করেন সেখানেও...’।

তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘ওরা ডাহা হারবে, তাই ভোটে ভয় পাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন