দোকান হতে হবে ঝাঁ-চকচকে। মেঝেতে লাগাতে হবে সাদা বা ধূসর রঙের টাইলস। দেওয়ালে সাদা ধপধপে রং। দোকানের বাইরে নাম, ঠিকানা, সরকারি নম্বর, মোবাইল নম্বর-সহ লাগাতে হবে সাইনবোর্ড। রেশন দোকানগুলিকে এই ভাবেই সাজিয়ে তোলার নির্দেশ দিতে চলেছে রাজ্যের খাদ্য দফতর। প্রশাসনের দাবি, রেশন দোকানগুলিকে ১ জুলাই থেকে নতুন সাজে দেখা যাবে।
হঠাৎ এই চেহারা পরিবর্তনের ভাবনা কেন? খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, আগামী দিনে রেশন দোকানে শুধু সরকারি চাল, গম, চিনি বিক্রি হবে না। সেখানে নামীদামি ব্র্যান্ডের প্রায় ৪৫০ ধরনের গৃহস্থালি পণ্য বিক্রিরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেই জন্য রেশন দোকানগুলির চেহারাও বদলানো প্রয়োজন।
দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি খাদ্য ভবনে রেশন দোকানের মালিক সংগঠনগুলিকে ডেকে এই সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাদ্য দফতরের কর্তারা জানান, রেশন দোকানগুলি সাধারণত আয়তনে ছোট হয়। তাই দোকান সাজাতে মালিকদের খুব বেশি খরচ হবে না। আর যেটুকু খরচ হবে, বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পণ্য বিক্রির কমিশন থেকেই সেটা উঠে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক দিন ধরেই চাইছেন, রেশন দোকানগুলিতে বাজারচলতি পরিচিত ব্র্যান্ডের সব পণ্যই কিছুটা সস্তায় বিক্রির ব্যবস্থা করা হোক। যাতে গ্রামের মানুষও রেশন দোকানে গিয়ে ওই সব জিনিস কিনতে পারেন। এখন রেশন দোকানগুলিতে এমন এমন অনেক জিনিস বিক্রি হয়, যা গ্রামের বাসিন্দারাও কিনতে চান না। বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই দেশের একটি বিখ্যাত পণ্য বিপণন সংস্থার সঙ্গে খাদ্য দফতরের চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী ওই সংস্থা রাজ্যের ২২ হাজার রেশন দোকানে নামীদামি সব ধরনের গৃহস্থালির পণ্য বাজারের থেকে খানিকটা সস্তায় বিক্রি করবে।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, রেশন দোকান সাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই সাইনবোর্ডে লিখতে হবে মালিকের নাম। দোকান কবে বন্ধ থাকবে, তা-ও জানাতে হবে। টোল ফ্রি নম্বর, মালিকের মোবাইল নম্বর— সবই লিখে রাখতে হবে। মন্ত্রীর দাবি, ভাল জিনিস বিক্রি করতে হলে, দোকানের চেহারাটাও বদলানো দরকার। দোকানে চাল-ডাল-চিনির সঙ্গে নামী সংস্থার সাবান-শ্যাম্পুও বিক্রি হবে। ‘‘আগামী দিনে রেশনে আইসক্রিম রাখারও ভাবনাচিন্তা চলছে,’’ বলেন খাদ্যমন্ত্রী।