আমির রেজার খোঁজে নেমে ফয়জল শিকার

জঙ্গি গোষ্ঠী ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতা এবং কলকাতার বেনিয়াপুকুরের এক কালের বাসিন্দা আমির রেজা খান সম্পর্কে খোঁজখবর করছিলেন লালবাজারের এসটিএফের গোয়েন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৬:২৭
Share:

আমির রেজা খান। ফাইল চিত্র।

সিংহ শিকারে নেমেছিল লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। আপাতত তাদের জালে পড়েছে নেকড়ে!

Advertisement

জঙ্গি গোষ্ঠী ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতা এবং কলকাতার বেনিয়াপুকুরের এক কালের বাসিন্দা আমির রেজা খান সম্পর্কে খোঁজখবর করছিলেন লালবাজারের এসটিএফের গোয়েন্দারা। সেই সূত্রেই সদ্য করাচির লস্কর-এ-তইবা শিবির থেকে ফেরা ফয়জল হাসান মির্জার নাম জানতে পারেন তাঁরা। লালবাজারের এক কর্তা জানান, মুম্বইয়ের যোগেশ্বরীতে ফয়জলের ডেরার সন্ধান মেলার পরে কলকাতা থেকে গোয়েন্দাদের একটি দল মুম্বই যায় এবং মহারাষ্ট্রের জঙ্গি দমন শাখা (এটিএস)-কে সঙ্গে নিয়ে পাকড়াও করে ফয়জলকে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ‘লোন উলফ অ্যাটাক’ বা একাই নাশকতা চালানোর জন্য ফয়জলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল লস্কর। করাচিতে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে পুষ্ট প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রথমে অস্ত্রচালনা এবং পরে বিস্ফোরকের ব্যবহার শেখানো হয় তাকে। মানববোমা হওয়ার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল। শিবিরে দিন বারো ছিল সে। করাচি থেকে দাউদ ইব্রাহিমের গোষ্ঠীর সাহায্যে শারজা, দুবাই হয়ে ভারতে ফেরে সে। এক গোয়েন্দা-কর্তা বলেন, ‘‘লস্করের নির্দেশ অনুযায়ী লোকসভা নির্বাচনের আগে মুম্বই-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণ ঘটানো এবং কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার উপরে হামলা চালানোর কাজ পেয়েছিল ফয়জল। তবে তার সেই নিশানায় এ রাজ্যের কোনও শহর বা নেতানেত্রী ছিলেন কি না, তা জানা যায়নি।’’

Advertisement

ফয়জল পেশায় বিদ্যুৎ-মিস্ত্রি। তার এক আত্মীয় দুবাইয়ে থাকে। সেই সূত্রেই সে একাধিক বার সেখানে গিয়েছিল। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, দুবাইয়েই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের এক নেতার সঙ্গে পরিচয় হয় ফয়জলের। সেই সূত্রেই তার নাম জানতে পারে আমির রেজা। আমিরের সুপারিশেই তাকে প্রশিক্ষণ শিবিরে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয় লস্কর। মাস দুয়েক আগে সে দুবাই হয়ে করাচি যায়।

গোয়েন্দাদের জেরায় ফয়জল স্বীকার করেছে, করাচির প্রশিক্ষণ শিবিরে পাক সেনা ও আধাসেনার একাধিক কর্তা উপস্থিত ছিলেন। এবং শিবিরের জঙ্গিদের আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহারের কলাকৌশল শেখাতেন তাঁরাই। খালি হাতে লড়াইয়ের প্যাঁচপয়জারও শেখানো হত। মুম্বইয়ের এক আইএসআই এজেন্টের সঙ্গে ফয়জলের যোগাযোগের কথা জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। আগেও সে একাধিক বার পাকিস্তান ও কাশ্মীর সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জঙ্গি ঘাঁটিতে গিয়েছে বলে জেরায় কবুল করেছে ফয়জল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন