ফাইল ছবি
রাজ্যকে আগে কথা দিলেও শেষমুহূর্তে আধার নথিভুক্তকরণ সংস্থাগুলিকে অনুমোদন দিল না কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউআইডিএআই। আচমকা এই সিদ্ধান্তের বদলে রীতিমতো বিপদে রাজ্য। আগামী দিনে আধার প্রক্রিয়া কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে প্রশাসনের অন্দরে।
ইউআইডিএআইর অভিযোগ, বারবার আর্জি সত্ত্বেও আধারের কাজে রেজিস্ট্রার হয়নি এ রাজ্য। ৩১ মার্চের পর বেসরকারি মাধ্যমে আধার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু রাজ্যের বহু মানুষ এখনও হয় নতুন করে নাম নথিভুক্ত করছেন, না হলে নিজের আধার কার্ডের তথ্য পরিমার্জন (আপডেট) করতে চাইছেন। এই পরিস্থিতিতে চাহিদার কথা মাথায় রেখে আধার প্রক্রিয়া আরও কিছুদিন চালাতে ইউআইডিএআই’য়ের কাছে অনুমতি চেয়েছিল রাজ্য সরকার। ৩০ জুন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চালানোর জন্য রাজ্যকে অনুমতিও দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা। রাজ্যের দাবি, লোকবল নেই বলেই রেজিস্ট্রার হওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে ইউআইডিএআই রাজ্যকে জানিয়েছিল, ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে সংস্থাগুলির অনুমোদন সক্রিয় থাকবে, একমাত্র সেগুলিই এই কাজ করতে পারবে। বাস্তবে রাজ্য দেখে, ৩১ মার্চের পরে বেশির ভাগ সংস্থারই অনুমোদন সক্রিয় নেই। ফলে ফের অনুমোদন দেওয়ার জন্য ইউআইডিএআই’কে অনুরোধ করে রাজ্য। এমন ২৫০টি সংস্থার তালিকা সংস্থাকে পাঠানোও হয়। সূত্রের খবর, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও সংস্থার অনুমোদন পুনর্নবীকরণ করা হবে না।
রাজ্যের কাছে এর কারণ স্পষ্ট না হলেও ইউআইডিএআই সূত্রে দাবি, সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, বেসরকারি কোনও সংস্থাকে দিয়ে আধার প্রক্রিয়া চালানো যাবে না। সেই কারণেই ৩১ মার্চের পরে অনুমোদনের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া সংস্থাগুলিকে আর আধার-প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার সম্ভব নয়। ফলে অনুমোদন পুনর্নবীকরণ সংক্রান্ত রাজ্যের দাবিও মানা যাচ্ছে না। ইউআইডিএআই সূত্রের খবর, আগে থেকে অনুমোদন থাকা (৩১ মার্চের পরেও) আনুমানিক চারশোটি নথিভুক্তকরণ সংস্থা গোটা রাজ্যে সক্রিয় রয়েছে এই মূহূর্তে। কমবেশি ১১০০টি ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে আধার প্রক্রিয়া চলছে। তা ছাড়া কলকাতা পুরসভার ৯, ১০ ও ১১ নম্বর বরোতে দু’টি এবং সার্কাস অ্যাভিনিউতে একটি নথিভুক্তকরণ সংস্থা কাজ করছে। ভবিষ্যতে অবশিষ্ট বেসরকারি নথিভুক্তকরণ সংস্থাগুলি বন্ধ হলেও ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসে আধারের কাজ চলবে। কিন্তু রাজ্যের জনসংখ্যা এবং চাহিদার নিরিখে এই সংখ্যা যে নেহাতই অপ্রতুল, তা স্বীকার করছে ইউআইডিএআই’ও।