প্রতীকী ছবি।
সরকার টাকা দিয়েছে। কিন্তু সেই টাকা খরচের ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ বা সদ্ব্যবহার শংসাপত্র জমা দিচ্ছে না বহু স্কুল। এই ব্যাপারে কড়া মনোভাব নিচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতর। রাজ্যের জেলা স্কুল পরিদর্শকদের এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষায় সরকারি অর্থের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের টাকা দেওয়া এবং সেই সুবাদে সরকারি হস্তক্ষেপের যুক্তি, পাল্টা যুক্তির লড়াই তীব্র। বিতর্ক এখন স্কুল স্তরেও। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, স্কুলের নিয়ন্ত্রণ এখন সরকারের মনোনীত সভাপতির অধীন সমিতির হাতে। অর্থাৎ খরচের সার্টিফিকেট না-দেওয়ার মতো অনিয়ম চলছে সরকারেরই ব্যর্থতায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব জেলা স্কুল পরিদর্শককে নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকেছিল স্কুলশিক্ষা দফতর। সব স্কুল যাতে অবিলম্বে ওই শংসাপত্র জমা দেয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেখানেই। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, অধিকাংশ স্কুলই এই শংসাপত্র এখনও জমা দেয়নি। এর ফলে যে পরে টাকা পেতে সমস্যা হবে, বৈঠকে তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্কুলে মেরামত ও সম্প্রসারণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, পঠনপাঠনের সামগ্রী কেনা ইত্যাদি খাতে দেওয়া টাকা খরচের শংসাপত্র অনেক স্কুলই জমা দিতে পারেনি। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ‘সিভিল ওয়ার্ক’ বা সম্প্রসারণ-মেরামতিতে খরচের শংসাপত্র তবু পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু অন্য দু’টি ক্ষেত্রে কোন স্কুল কত খরচ করেছে, তার প্রায় কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ স্কুলই এই দু’টি বিষয়ে এখনও কোনও শংসাপত্র দিতে জমা পারেনি। রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্টেও এই টাকা ব্যবহারের শংসাপত্র জমা না-দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
শংসাপত্র জমা না-পড়ায় নতুন হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছে বিরোধী শিবির। সিপিআইয়ের শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল শুক্রবার বলেন, ‘‘রাজ্যে আর্থিক বিশৃঙ্খলা চলছে। এর আগে কখনও এমন হয়নি।’’ নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘এখন স্কুলগুলির পরিচালন সমিতির মাথায় রয়েছেন সরকার মনোনীত সভাপতি। সেই সব স্কুলও যদি শংসাপত্র না-দেয়, তা হলে বুঝতে হবে, এটা সরকারেরই ব্যর্থতা।’’