জোট গড়ব, দলও ভাঙব! সরব অধীরেরা

দিল্লিতে অ-বিজেপি জোট তৈরির তৎপরতা সেরে তৃণমূল নেত্রীর উড়ান কলকাতার মাটি ছোঁয়ার আগেই শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করার আগে বিরোধীরা আগে ঘর সামলাক!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫২
Share:

বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গড়ার লক্ষ্যে জাতীয় স্তরে তৎপর হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরে কংগ্রেসকেও সেই লক্ষ্যে পাশে চাইছেন তিনি। আর একই সময়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়ে দিচ্ছেন, এ রাজ্যে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবিরের নেতা-বিধায়কদের তাঁরা দলে টানবেন! তৃণমূলের এই ভূমিকায় বাংলায় বিজেপির জমিই আরও শক্ত হচ্ছে বলে সরব কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব।

Advertisement

দিল্লিতে অ-বিজেপি জোট তৈরির তৎপরতা সেরে তৃণমূল নেত্রীর উড়ান কলকাতার মাটি ছোঁয়ার আগেই শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করার আগে বিরোধীরা আগে ঘর সামলাক! ওদের একাধিক বিধায়ক আমাদের সঙ্গে আসতে চান। যোগাযোগ রাখছেন।’’ নাম না-করলেও তাঁর মন্তব্যের ইঙ্গিত মূলত কংগ্রেসের দিকেই ছিল বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। রাজ্যসভায় কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘবিকে শাসক দলের পাঁচ বিধায়ক ভোট দিয়ে জেতানোর দিনেই কংগ্রেসের গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাসকে দলে নেওয়ার ঘোষণা করেছিল তৃণমূল! প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর জেলা মুর্শিদাবাদ এবং কংগ্রেসের আর এক ঘাঁটি মালদহের আরও কয়েক জন বিধায়কের দিকেও তৃণমূলের নজর রয়েছে। শাসক শিবির সূত্রের ইঙ্গিত, সুযোগ-সুবিধামতো তাঁদের দলে নেওয়ার ঘোষণা করা হবে।

উত্তরে কোচবিহার থেকে দক্ষিণে কাকদ্বীপ পর্যন্ত সর্বত্রই তৃণমূলের আধিপত্য এখন প্রতিষ্ঠিত। আগামী লোকসভা ভোটে আসন বাড়াতে হলে তৃণমূলকে এখন নজর দিতে হবে মুর্শিদাবাদ ও মালদহেই। ওই দুই জেলায় কংগ্রেসের অবশিষ্ট সংগঠন ভেঙে তাদের এমন ভাবে কোণঠাসা করা তৃণমূলের লক্ষ্য, যাতে জোট না হলেও তৃণমূল আসন জিততে পারে। আবার কংগ্রেস বিশেষ দরকষাকষির জায়গাতেও না থাকে।

Advertisement

প্রদেশ সভাপতি অধীরবাবুর কথায়, ‘‘গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল, এই রকম কায়দায় তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেসকে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন! আর বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষ, বিরোধী দলগুলিকে ভাঙিয়ে এমন কাজ করছেন, যাতে বিজেপির হাতই শক্ত হয়।’’ জোটের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তৃণমূলের এই বিপজ্জনক ভূমিকা মাথায় রাখার কথা দলের হাইকম্যান্ডকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও। বিধানসভায় কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর মতে, তৃণমূল যে বিপজ্জনক খেলা খেলছে, তাতে তাদেরও ঘর পুড়বে! আর বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘আমরা তো বলেইছি, তৃণমূলের চেয়ে বড় বন্ধু বিজেপির আর কে আছে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন