প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অজানা জ্বরে ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন চার জন। দেগঙ্গা থেকে ব্যারাকপুর— সর্বত্র ছ়ড়াচ্ছে অজানা জ্বর। এর মধ্যেই পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বললেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রায় নেই বললেই চলে। ডেঙ্গিরোগ শূন্য করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।’’
ডেঙ্গি রুখতে উত্তর ২৪ পরগনার সাত পুরসভার প্রধানদের নিয়ে শুক্রবার মহাকরণে বৈঠক করেন ফিরহাদ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই বৈঠক বলে জানান পুরমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, অজানা জ্বর নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। বর্ষায় সর্দিকাশি হয়। জ্বর হয় তার জেরেই। জ্বর হলেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া বলে আতঙ্কিত হওয়ার মানে নেই। দু’-চার জায়গায় ডেঙ্গি সংক্রমণের খবর আসছে ঠিকই। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, আক্রান্তেরা অন্য জায়গার বাসিন্দা।
রাজ্য ডেঙ্গির তথ্য দিচ্ছে না বলে কেন্দ্রের তরফে বারবার অভিযোগ উঠছে। রাজ্য যদি ডেঙ্গিমুক্ত হওয়ার দিকে এগিয়েই যাবে, তা হলে তথ্য নিয়ে গোপনীয়তার অভিযোগ কেন?
‘‘ডেঙ্গির তথ্য দেওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরের। এই নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারি না। তবে সচেতনতা প্রসার পুর দফতরের কাজ। সেই দিক থেকে ডেঙ্গিশূন্য করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্য,’’ বলেন ফিরহাদ। আর রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যা করা উচিত, সেটাই করা হচ্ছে।’’
কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী শিবির। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাংলা তো ডেঙ্গিশূন্য হবেই! কারণ, ডেঙ্গিকে সরকার অজানা রোগের তকমা দিয়ে চেপে দেবে! কেরল নিপা ভাইরাসের মোকাবিলা করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে আর বাংলা রোগ মানতেই অস্বীকার করছে!’’ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অজানা জ্বরকে গুরুত্ব না-দেওয়ায় বিভ্রান্তি বাড়বে। গত বছর ওই জ্বরে ক’জন মারা গিয়েছেন, তার হিসেব স্বাস্থ্য দফতরে নেই। এ বারেও বর্ষার সূচনা থেকেই জ্বরে প্রাণহানি চলছে। প্রশাসন তার পরেও ওই জ্বরকে ‘অজানা’ তকমা দিচ্ছে!
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এ দিনের বৈঠকে সেই বিষয়েও আলোচনা হয়। ডেঙ্গি মোকাবিলায় সচেতনতাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে, বাড়ি বাড়ি প্রচারে নজর দিতে হবে। বৈঠকে অর্জুন সিংহ জানান, ব্যারাকপুরের কিছু জায়গায় পরিত্যক্ত বাঁশে জল জমছে। সেখানে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভা মিলেছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পুজোর মণ্ডপ গড়ার বাঁশেও জল জমে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। তাই সে-দিকেও নজর রাখা হবে। পুরমন্ত্রী জানান, ডেঙ্গি নিয়ে ১৪ অগস্ট ফের সব পুরসভাকে নিয়ে আবার বৈঠক ডাকা হয়েছে সল্টলেকে।