মেলায় আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর

কী হল বাউল অ্যাকাডেমির, জল্পনা জয়দেব-কেঁদুলিতে

ফিল্মসিটি গড়ার কথা থাকলেও, তা আগেই বাতিল হয়েছে। এ বার ঘোষণা অনুযায়ী ‘বাউল অ্যাকাডেমি’র কী হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জয়দেবে। সব কিছু ঠিক থাকলে এই প্রথম অজয়ের চরে জয়দেব-কেঁদুলির মেলায় পা রাখতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

অরুণ মুখোপাধ্যায় ও বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:১৯
Share:

জোর কদমে চলছে মেলার প্রস্তুতি। শনিবার দুপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ফিল্মসিটি গড়ার কথা থাকলেও, তা আগেই বাতিল হয়েছে। এ বার ঘোষণা অনুযায়ী ‘বাউল অ্যাকাডেমি’র কী হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জয়দেবে।

Advertisement

সব কিছু ঠিক থাকলে এই প্রথম অজয়ের চরে জয়দেব-কেঁদুলির মেলায় পা রাখতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৮ জানুয়ারি সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী একটি বাউল উৎসবের উদ্বোধন করতে চলেছেন বলে খবর। যদিও চূড়ান্ত রূপরেখা এখনও তৈরি হয়নি বলেই জেলা প্রশাসনের দাবি। তবে, অ্যাকাডেমির মতোই গত বছর জেলায় এসে একটি বাউল উৎসব চালু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই তাঁর এই আগমন বলে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি। এ কথার সত্যতা স্বীকার করে বোলপুরের বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে সব রকমের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ওঁর হাত দিয়েই ওই দিন থেকেই শুরু হবে বাউল উৎসব।’’ ক’ দিন ধরে সেই উৎসব চলবে, তা অবশ্য মন্ত্রী জানাতে পারেননি।

আগামী ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির ভোরে অজয় নদের পাড়ে শুরু হচ্ছে জয়দেব-কেঁদুলি মেলা। মেলা শেষ হবে ১৭ জানুয়ারি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসছেন ১৭ তারিখই। ওই দিন পর্যটকদের জন্য ‘আমার কুটীর’-এর কটেজের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরেই রাত কাটাবেন। পরের দিনই জয়দেবে আসার কথা তাঁর।’’

Advertisement

মেলা দোরগোড়ায় আসতেই ঘোষণা মতো জয়দেব বাউল অ্যাকাডেমির কী হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চন্দ্রনাথের অবশ্য দাবি, ‘‘বাউল অ্যাকাডেমি জয়দেবেই হবে। রাজ্যের বাউলেরা সেখানে নিয়মিত চর্চা করতে পাড়বেন। খুব শীঘ্রই তার কাজ শুরু হবে।’’ ঘটনা হল, গত সেপ্টেম্বরেই বোলপুরে বৈঠকে করেছিলেন রাজ্যের পর্যটন সচিব অজয় বর্ধন। সেখানেই জানানো হয়েছিল, ‘আমার কুটীর’-এ ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পর্যটকদের থাকার জায়গা তৈরির পাশাপাশি জয়দেবে বাউল অ্যাকাডেমি, নলহাটির নলাটেশ্বরী, লাভপুরের ফুল্লরা, নানুরে বিশালাক্ষী, রামি চণ্ডীদাস-সহ একাধিক পর্যটনের জায়গাও ঢেলে সাজাবে পর্যটন দফতর।

‘আমার কুটীর’-এর কটেজের উদ্বোধনের দিন চলে এলেও জয়দেবে বাউল অ্যাকাডেমি গড়ার প্রকল্পটি কত দূর এগোল, সে বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারছে না জেলা প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, একসময় জয়দেব এলাকায় ‘ফিল্মসিটি’ গড়ার জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু, অচিরেই বাতিল হয়ে যায় সেই প্রকল্প। এ বারও কী জয়দেবের কপালে কিছু জুটবে না, প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। বোলপুরের বাউল তরুণ খ্যাপা অবশ্য বলছেন, ‘‘বীরভূমে বাউল চর্চার নির্দিষ্ট কোনও জায়গা নেই। জয়দেবে বাউল অ্যাকাডেমি হলে, আমাদের পক্ষে মঙ্গলই।’’

এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জয়দেবে। শনিবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল রাস্তার দু’পাশে খাল করে বাঁশের খুঁটির ব্যারিকেড বসানোর কাজ চলছে। অজয়ের চরে দোকান-সহ নানা পসরার কাঠামো বসতে শুরু করেছে। মেলার জন্য সুরকি ফেলে তৈরি হচ্ছে নানা পথও। মেলার ভিড় সামলাতে সব রকমের পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জয়দেব মেলার সম্পাদক তথা বোলপুরের মহকুমাশাসক শম্পা হাজরাও।

অন্য দিকে, ব্যারিকেড বসার জন্য এ বারের মেলায় রাস্তায় কাউকে পসরা নিয়ে বসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। দূরে গিয়ে বসতে হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। কুটির শিল্পের পসরা নিয়ে বসা যিশু মাহারা, অতীশ দেবনাথদের বক্তব্য, ‘‘আমরা ব্যবসা করব কী করে? সরকারি ভাবে তিন দিন হলেও এই মেলা প্রায় ১৫ দিন ধরে চলে। দূরে বসার জন্য আমাদের ব্যবসা মার খাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement