সুরক্ষা: বারাসতের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রাস্তাতেই হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
ষষ্ঠ বামফ্রন্ট সরকার গঠনের পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর স্লোগান ছিল, ‘ডু ইট নাও’। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সেই স্লোগানের পুনরুক্তি করেননি ঠিকই, কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছেন, লাল ফিতের ফাঁসে বিরক্ত তিনিও। এ দিন বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে দেরির প্রসঙ্গ উঠতেই ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘‘একটা সরকার পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যে চার বছর ধরে কাগজ চালাচালি হলে কাজ করব কখন?’’
এ দিনের বৈঠকে বিধায়ক অর্জুন সিংহ এবং শীলভদ্র দত্তের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ব্যারাকপুরে মঙ্গল পাণ্ডে ঘাটের কাছে উদ্যান সংস্কারের কাজ কত দূর এগিয়েছে। মাস আষ্টেক আগে গঙ্গাতীর সৌন্দর্যায়নের ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। এত দিন পরেও কাজ বিশেষ এগোয়নি জেনে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘‘ছ’-আট মাস লেগে গেল কাগজ চালাচালি করতে! এখন নকশার জন্য টেন্ডার হবে! একটা কাজে এত সময় নিচ্ছে!’’ জেলাশাসক অন্তরা আচার্যের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সাত-আট মাস আগে বলেছি। এত দিন কেন লাগছে! একটা কথা বলার পর বছরের পর বছর সময় লাগলে কাজ কখন হবে? কাজ না হলে করার দরকার নেই। এত দিনেও লাল ফিতের ফাঁস শেষ হবে না? এত মাল্টিডিপার্টমেন্ট কেন!’’
এর পরে রাস্তা তৈরিতে ঢিলেমি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর ২৪ পরগনায় ১ হাজার কিলোমিটারের কিছু বেশি রাস্তা তৈরির কাজে কেন গতি আসছে না, তা উত্তর ২৪ পরগনার জেলাসভাধিপতি রেহানা খাতুনের কাছে জানতে চান তিনি। রেহানার ব্যাখ্যা মুখ্যমন্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। মমতা বলেন, ‘‘এখনও টেন্ডার হয়নি! ক’দিন বাদে ভোট। তখন কী করে করবে?’’
আরও পড়ুন: রানিকাহিনি! বিপাকে চিরঞ্জিৎ
তখন পঞ্চায়েত সচিব সৌরভ দাস মুখ্যমন্ত্রীকে ওই প্রকল্পের টেন্ডার সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন। উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বলুন না, টেন্ডার ঝুলিয়ে দিয়েছে!’’ জেলা সভাধিপতি ও পঞ্চায়েত সচিবকে তিনি মার্চের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন। টাকিতে ইছামতীর উপরে প্রস্তাবিত সেতু নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। নকশার গোলমালের কারণে তা নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘ভুল ব্রিজ করা হয়েছে। সে জন্য সাধারণ মানুষের টাকা ফের খরচ করতে হবে?’’