প্রিয় নেতা কে, ভর্তির আগেই হচ্ছে ‘সমীক্ষা’

গত কয়েক দিন ধরেই নদিয়ার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে একটি ফর্ম। ছাত্র সংসদের নামাঙ্কিত সেই ফর্মে এ কথা-সে কথার মধ্যে রয়েছে দু’টি প্রশ্ন— এক, তোমার প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তি কে? দুই, কেন তাঁকে ভাল লাগে?

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩৫
Share:

কলেজে ভর্তি হতে আসা ছেলেমেয়েদের মন জেনে নেওয়া চাই আগেভাগে!

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরেই নদিয়ার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে একটি ফর্ম। ছাত্র সংসদের নামাঙ্কিত সেই ফর্মে এ কথা-সে কথার মধ্যে রয়েছে দু’টি প্রশ্ন— এক, তোমার প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তি কে? দুই, কেন তাঁকে ভাল লাগে?

কলেজের টিএমসিপি ইউনিট সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত কেউ তৃণমূল ছাড়া আর কোনও দলের নেতানেত্রীর নাম লেখেননি। কেউ লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক ছাত্রী লিখেছেন, মমতা প্রিয়। কারণ তিনি কন্যাশ্রী প্রকল্প করেছেন। এক ছাত্র আবার ঝুঁকেছেন অভিষেকের দিকে। কারণ, তিনি ‘যুব সমাজের প্রেরণা’। এঁরা ভর্তি হতে পারলে তাঁদের হয়ে কাজ করবেন বা নিদেনপক্ষে ভোটটা দেবেন বলেই টিএমসিপি নেতারা ধরে নিচ্ছেন।

Advertisement

টিএমসিপি-র কলেজ ইউনিট সভাপতি সুজয় হালদারের ব্যাখ্যা, “এটা সমীক্ষা। পড়ুয়াদের পাশে থাকার ক্ষেত্রে আমাদের কোনও ঘাটতি থাকছে কি না, তা বুঝে নিজেদের সংশোধন করে নেব।” তার সঙ্গে প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কী সম্পর্ক? সুজয় বলেন, “আসলে জানতে চাইছি, ছাত্রছাত্রীদের কাছে রাজ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কে?” সংগঠনের জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, “এতে সাধারণ পড়ুয়াদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। এটাও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে যুব সমাজের মন কারা দখল করে আছে।”

সেই ফর্ম।

নতুন ছাত্রছাত্রীদের দলে টানার চেষ্টা নতুন কিছু নয়। বাম আমলে বহু কলেজে ভর্তির সময়ে নতুন ছাত্রছাত্রীদের থেকে দু’টাকা করে চাঁদা নিয়ে সদস্য করত এসএফআই। ভয়ে হোক বা ভক্তিতে তখনও বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী চাঁদা দিতে আপত্তি করত না, এখনও কেউ উল্টো সুর গাইছে না। যেখানে গত কয়েক বছরে টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কলেজ চত্বর কেঁপেছে, অনেকটাই নষ্ট হয়েছে সুনাম, সেখানে ফর্মের শেষ প্রশ্ন, ‘যদি কোনও পরামর্শ থাকে’র পাশে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই লিখে দিয়েছেন ‘নেই’।

এসএফআইয়ের নদিয়া জেলা সম্পাদক শান্তনু সিংহের টিপ্পনী, ‘‘কে আর যেচে হাঁড়িকাঠে গলা দিতে যাবে? তবে সামনে যা-ই দেখাক, বহু ছাত্রছাত্রীই ওদের সঙ্গে নেই। আর এ ভাবে জানতে চাওয়াই তো অসঙ্গত!’’ কলেজের অধ্যক্ষ শোভন নিয়োগী অবশ্য বলেন, ‘‘এর সঙ্গে কলেজে ভর্তির সম্পর্ক নেই। তবে আমাদের সময়েও এমন দেখে এসেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন