Pahalgam Terror Attack

‘সমর্থন করছি, কিন্তু সন্তুষ্ট নই’, পহেলগাঁওয়ে নিহত বেহালার সমীরের স্ত্রী বললেন, পাকিস্তান জঙ্গিশূন্য হলেই বিচার মিলবে

মঙ্গলবার গভীর রাতে জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। সফল হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। অনেকে বলছেন, পহেলগাঁওয়ে স্বামীহারাদের ন্যায়বিচার দিতেই এ হেন নামকরণ। তবে নিহত সমীরের স্ত্রী শবরীর মুখে ভাবলেশ নেই।

Advertisement

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৫ ১৩:০২
Share:

(বাঁ দিকে) নিহত সমীর গুহ। সমীরের স্ত্রী শবরী (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।

এখনই স্বস্তি নয়, জঙ্গিরা সম্পূর্ণ নিকেশ না হওয়া পর্যন্ত ন্যায়বিচার হবে না। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর এমনই মন্তব্য করলেন পহেলগাঁও হামলায় নিহত বেহালার সখেরবাজারের সমীর গুহের স্ত্রী শবরী।

Advertisement

স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। হামলার পরের দিনই ঘরে ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আর ফেরা হয়নি বেহালার বাসিন্দা সমীরের। গত ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই হামলার ১৫ দিন পর পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। ভারতের এ হেন প্রত্যাঘাতের পর অনেকেই উচ্ছ্বসিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভারতীয় সেনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন বহু মানুষ। কিন্তু সেই উচ্ছ্বাসের আঁচ পৌঁছোয়নি বেহালার সখেরবাজারের বাড়িতে। ডাকাডাকির পর বুধবার সকালে দরজা খুলে বেরোলেন নিহত সমীরের স্ত্রী শবরী। নিস্পৃহ গলায় বললেন, ‘‘আগে জঙ্গিরা সম্পূর্ণ নিকেশ হোক, তবেই ন্যায়বিচার মিলবে।’’

মঙ্গলবার গভীর রাতে জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। সফল হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। অনেকে বলছেন, পহেলগাঁওয়ে স্বামীহারাদের ন্যায়বিচার দিতেই এ হেন নামকরণ। তবে শবরীর মুখে তার ভাবলেশ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘পাল্টা আঘাত তো করতেই হত। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের শেষ করা উচিত। কিন্তু আমাদের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তা তো আর পূরণ হবে না! এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না-হোক, এটাই চাইব।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের জুনিয়র স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসার পদে কর্মরত সমীরই বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। মেয়ে শুভাঙ্গী দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সঙ্গে ফ্ল্যাটের ঋণও রয়েছে। প্রতি মাসে সুদ-সহ ইএমআইয়ের টাকা গুনতে হয়। তাই স্বামীর মৃত্যুর পর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে শবরীর। কী ভাবে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাবেন, কোথা থেকে ঋণের টাকা শোধ করবেন— ভেবে কূল পাচ্ছেন না শবরী। বুধবারও ভারত সরকারের কাছে দাবি জানালেন, সমীরের চাকরিটি অন্তত তাঁকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

Advertisement

তবে এখানেই শেষ নয়, বলছেন শবরী। ‘‘শুধু ওখানেই নয়, গোটা পাকিস্তানে এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিরা রয়েছে। যত ক্ষণ না সেখানকার জঙ্গিদের সম্পূর্ণ নিকেশ করা হচ্ছে, তত ক্ষণ ন্যায়বিচার মিলবে না। আজ এই ঘটনা পর্যটকদের সঙ্গে ঘটেছে। কিন্তু সেনাদের সঙ্গে তো প্রায়ই ঘটে। তাঁদের পরিজনেরাও তো মানুষ!’’ এরকম ঘটনা ভবিষ্যতে আর যেন কারও সঙ্গে না ঘটে, এমনটাই চান শবরী। উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে নিহত বাংলার তিন বাসিন্দার পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণামতো মঙ্গলবার কলকাতার দুই নিহতের পরিবারের হাতে ১০ লক্ষ টাকা করে চেক তুলে দিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাস। আর্থিক সাহায্য পেয়েছে পাটুলির বাসিন্দা বিতান অধিকারীর পরিবারও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement