ফাইল চিত্র।
তাঁর দলে ০.১ শতাংশ লোকও তোলাবাজি করে না বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় এই দাবির পাশাপাশিই অবশ্য তিনি ছাত্র, শ্রমিক সংগঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। সেই সঙ্গেই নেত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘পচা শামুকে একটু পা কাটলে, পুরোটা কেটে দেবে। তাই কেটে দেওয়ার আগে আমরাই সেই পচা শামুককে কেটে দেব।’’
ছাত্র সংগঠনকে দিয়ে এ দিন ভর্ৎসনা শুরু করেন মমতা। কলেজে টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তিতে হামেশাই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ(টিএমসিপি)-র নাম জড়িয়েছে। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও এ বছর ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতেই টিএমসিপি ফের ছাত্র ভর্তিতে টাকার ‘টোপ’ দেওয়া শুরু করেছে বলে দল অভিযোগ পেয়েছে। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘ছাত্র রাজনীতি করা মানে ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করা। টাকা তোলা নয়।’’
ছাত্র সংগঠনের এ হেন আচরণে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘‘হঠাৎ করে কেউ যদি ভাবেন ছাত্রনেতা বা নেত্রী হয়ে গেলাম, এখনই আমাকে অনেকটা করে ফেলতে হবে, তা হবে না।’’ কিছু ছাত্র নেতা বা নেত্রীর আচরণে তিনি যে অসন্তুষ্ট, তা বুঝিয়ে মমতা বলেন, ‘‘যিনি নেতা হবেন, তাঁকেই পুরো কমিটিটা পরিচালনা করতে হয়। ফলে মাথায় যাঁরা আছেন, ঠিকভাবে আচরণ করুন।’’
এর পরেই উলুবেড়িয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান আব্বাসুদ্দিন খানের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ নিয়ে সরব হন মমতা। আব্বাসউদ্দিনকে শোধরাতে সাত দিন সময় দেন তিনি।
দলের শ্রমিক সংগঠনও দলের নাম করে চাঁদা তোলে এবং সেই হিসেব দলের কাছে থাকে না বলে মমতা এ দিন অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘দলের নামে টাকা তুলব আর সে টাকা দলকে দেব না, এটা তো হতে পারে না!’’ দলের শ্রমিক সংগঠনকে তাই তাঁর নির্দেশ, ‘‘১টাকা বা ২টাকা যাই চাঁদা দিন, তার ২৫% নিজেদের সংগঠনে খরচ করুন, ৭৫% দলকে দিন। যাতে আয়করে দলের তরফে এই হিসেবটা দেখানো যায়।’’
আরও পড়ুন: কেউ বাড়ি করলে তোমাকে টাকা দেবে কেন? ভরা সভায় এক নেতাকে ধমক মমতার
পুরসভাগুলিকে মমতার নির্দেশ, ‘‘ফালতু খরচ বন্ধ করুন। রাস্তার ধারে টি হাউস বা ক্যাফে করার তো কোনও দরকার নেই। বরং রাস্তাঘাট ঠিকমতো পরিষ্কার থাকছে কি না, জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে কি না, পানীয় জল মানুষ পাচ্ছে কি না, সেগুলি দেখুন।’’