পোশাক অপছন্দ শ্বশুরবাড়ির, বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

কেয়ার বাড়ি নৈহাটির মালঞ্চ শান্তিনগরে। একই পাড়ার বান্টির সঙ্গে প্রেম। বিয়ে হয়েছিল এগারো মাস আগে। তার পর থেকেই শুরু হয় অশান্তি। অভিযোগ, বান্টির আপত্তি না থাকলেও কেয়ার পোশাক-আশাক নিয়ে নানা কথা শোনাতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নৈহাটি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০১:৩৩
Share:

কেয়া দাস

সাজগোজ করতে ভালবাসতেন বছর কুড়ির তরুণী। জিনস-টি শার্টও পরতেন। বিয়ে হয়েছে বছর ঘোরেনি। বৌমার সাজপোশাক নাপসন্দ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। এই নিয়ে সংসারে অশান্তি ছিল। শেষমেশ ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল কেয়া দাসের। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর জা এবং শ্বশুরকে।

Advertisement

কেয়ার বাড়ি নৈহাটির মালঞ্চ শান্তিনগরে। একই পাড়ার বান্টির সঙ্গে প্রেম। বিয়ে হয়েছিল এগারো মাস আগে। তার পর থেকেই শুরু হয় অশান্তি। অভিযোগ, বান্টির আপত্তি না থাকলেও কেয়ার পোশাক-আশাক নিয়ে নানা কথা শোনাতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

দিন তিনেক আগে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন কেয়া। সেখানে ভাইয়ের কাছে স্কুটি চালানো শিখছিলেন। সেটা চোখে পড়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফিরলে শুরু হয় গঞ্জনা। শুক্রবার দুপুরে শ্বশুরবাড়ির ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে কেয়ার দেহ।

Advertisement

কেয়ার পিসি সারথি দে বলেন, ‘‘এটা আত্মহত্যা বলে আমরা মানি না। ওকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সারথির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মেয়ের পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে নানা খোঁটা দিত শ্বশুর, জা-সহ আরও কেউ কেউ। কেয়া জিনস, টি-শার্ট পরতে ভালবাসতেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজনের তাতে ঘোর আপত্তি। সারথির বক্তব্য, ‘‘মেয়েটার সাজগোজ মেনে নিতে পারত না। আমরা এ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাও বলেছি। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। স্কুটার চালানো শেখার কী দরকার, তা নিয়েও ওকে গঞ্জনা দেওয়া হয়।’’ সারথিদের অভিযোগ, কেয়া এ সবের প্রতিবাদ করায় তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাপের বাড়ির লোকজনের আরও অভিযোগ, নৈহাটি থানা প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি। প্রতিবাদে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দেহ নিয়ে থানার কাছে পথ অবরোধে বসেন বাপের বাড়ির লোকজন, পাড়া-পড়শিরা। পরে পুলিশ অভিযোগ নেয়। গ্রেফতার করা হয় কেয়ার শ্বশুর মানব দাস ও বড় জা শ্যামলীকে। অবরোধ ওঠে। দেহ পাঠানো হয় ময়না-তদন্তে। পুলিশ কর্তাদের দাবি, অভিযোগ না নেওয়ার প্রশ্ন নেই। মেয়ের বাড়ির লোকজন থানায় এলে তাঁদের কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল।

খুনের অভিযোগ মানতে চাননি কেয়ার স্বামী বান্টি। তবে স্ত্রীর পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে তাঁর বাড়ির লোকজনের আপত্তির কথা মানছেন। বান্টির কথায়, ‘‘ও জিনস, টি-শার্ট পরতে ভালবাসত। কিন্তু আমাদের বাড়ি থেকে তাতে আপত্তি ছিল। আমি বলেছিলাম, ঝামেলা করার কী দরকার। আমরা যখন বেড়াতে যাব, তখন যা খুশি পরো। এ সবের জেরে ও এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন