তালিকা-ছুট মাকেও কি যেতে হবে শিবিরে, উদ্বিগ্ন মেয়ে

এখন বরপেটা রোডের বাড়ি থেকে সবাই চলে এসেছেন বক্সিরহাটে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হবে কি না, জানেন না।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

লুনা ও তাঁর বাবা মনোজ গোপের নাম রয়েছে পঞ্জিতে। তবে সে তালিকায় নাম নেই মা আরতি গোপের। প্রতীকী ছবি।

নাগরিক পঞ্জিতে নাম নেই মা আরতি গোপের। তা হলে তাঁকেও কি নিয়ে যাওয়া হবে শিবিরে? সেই চিন্তায় রাতে ঘুম ছুটেছে অসমের বরপেটা রোডের বাসিন্দা লুনা গোপের। বিশেষ করে টেলিভিশনের পর্দায় সেই শিবিরের ছবি দেখার পর থেকে আর স্থির থাকতে পারছেন না তিনি। লুনার কথায়, “আমরা সবাই আশঙ্কায় কাঁটা হয়ে রয়েছি।’’

Advertisement

লুনা ও তাঁর বাবা মনোজ গোপের নাম রয়েছে পঞ্জিতে। আরতিদেবীর নাম কেন উঠছে না, তাঁরা বুঝতে পারছেন না। আরতিদেবীর পরিবার কোচবিহারের বহু পুরনো বাসিন্দা। ১৯৭১ সালের আগের সেই নথি পেশ করেছেন তাঁরা। আরতিদেবীর বাবা সতীশচন্দ্র ঘোষ পশ্চিমবঙ্গে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬৮ সালে স্কুলে যোগ দেন। আরতিদেবীর এক ভাইও এখন তুফানগঞ্জের একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। মনোজ-আরতির বিয়ে হয় ১৯৯১ সালে। সেই থেকেই বরপেটা রোডের বাসিন্দা আরতিদেবী।

লুনা জানান, সব কাগজ দেওয়ার পরেও দু’দফায় পঞ্জি থেকে তাঁর মায়ের নাম বাদ গিয়েছে। আরতিদেবীর বাবা এবং মা-ও মেয়ের নাম পঞ্জিতে না ওঠায় উদ্বিগ্ন। মনোজবাবু বলেন, “যা যা নথি চেয়েছে, সব জমা দেওয়া হয়েছে। তার পরেও কেন বারবার নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে, তা বুঝতে পাচ্ছি না। এ বারে বলছে ফরেনার ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে। তাতেও যদি নাম বাদ যায়, তা হলে কী হবে?”

Advertisement

এখন বরপেটা রোডের বাড়ি থেকে সবাই চলে এসেছেন বক্সিরহাটে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হবে কি না, জানেন না। এমন বয়সে এসে এই অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে, কখনও কল্পনাতেও ভাবেননি আরতিদেবী। তাঁর কথায়, “ছেলেবেলা কেটেছে বক্সিরহাটে। এখানে পড়াশোনা করেছি। পরে বিয়ে হল অসমে। এখন আমাকে বিদেশি বলছে। এ সব কী হচ্ছে!’’

তিনি একা নন। বরপেটা রোডে কোচবিহারের অনেক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাঁদের অনেকের নাম নাগরিক পঞ্জিতে নেই। আতঙ্কে রয়েছেন সেই সব পরিবার। লুনা বলেন, “আমরা চাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এগিয়ে আসুক। পশ্চিমবঙ্গের মেয়েরা যে বিদেশি নয়, তা তথ্য দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন