—ফাইল চিত্র।
চা বাগানে কাজে যোগ দেওয়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই চরম অভিজ্ঞতা হয়েছিল শিলিগুড়ির বাসিন্দা এক মহিলার। গায়ে সিগারেটের ছেঁকা দেওয়ার পাশাপাশি বাগানে আটকে রেখে তিন দিন ধরে তাঁর উপরে যৌন নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় থানায় যাওয়া তো দূর, ছ’মাস মুখ বুজে কাজ করে গিয়েছিলেন ওই মহিলা!
শুক্রবার রাজ্যের শ্রম দফতরের উদ্যোগে মানিকতলার ইএসআই হাসপাতালে আয়োজিত ‘সেভ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সেভ ওয়ার্কার্স’ কর্মশালায় ওই মহিলা বললেন, ‘‘আমায় বলা হয়েছিল, চা বাগানের এ সব কাজে বিচার হয় না। কোনও আইনই নেই!’’ জানালেন, প্রথমটায় তাঁর ধারণাই ছিল না কার কাছে যাবেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ কিছু করবে না বলেই মনে হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে এমন বহু ঘটনা ঘটে যা পুলিশের কাছে যায় না। গেলেও কোনও কাজ হয় না।’’ পরে দফতরের আইনি সাহায্যে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। অপরাধীরা আপাতত হাজতে।
এ দিন ওই মহিলা যখন নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন, সভাঘরে উপস্থিত রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। আশপাশ থেকে আরও হাত উঠছে এই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে। মন্ত্রী বললেন, ‘‘এই জন্যই এমন কর্মশালা। সকলের জন্য আইনি সাহায্য মিলবে। মহিলারা কর্মক্ষেত্রে সমান।’’
রাজ্যের যুগ্ম শ্রম কমিশনার সমীরকুমার বসু জানালেন, প্রতি বছর মার্চ মাসে নানা সচেতনতা-কর্মসূচি নেয় শ্রম দফতর। ‘স্টেট লেবার ইনস্টিটিউট’-এর উদ্যোগে এ দিন তেমনই এক কর্মসূচি ছিল ইএসআই হাসপাতালে। শ্রমমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্রম কমিশনার জাভেদ আখতার, অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অনুরাধা মণ্ডল, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস প্রশান্ত ভট্টাচার্য-সহ বিশিষ্টেরা।
এ দিনের অনুষ্ঠানে সচেতনতা প্রচার সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টাস্ক ফোর্স গঠনেরও ভাবনা-চিন্তা করছে শ্রম দফতর। অনুষ্ঠান শেষে মলয়বাবু বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী-সহ একাধিক ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাজ দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। শ্রম দফতরও সেই পথে হাঁটছে।’’