অমিত শাহের সভার জায়গা পেতে ফের নাকাল বিজেপি

ধর্মতলার পরে বর্ধমান। অমিত শাহের সভা বানচাল করতে ফের প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলল বিজেপি। আগামী ২০ জানুয়ারি বিজেপি সভাপতির জনসভার জন্য পছন্দসই মাঠ থেকে বৈঠক করার জন্য টাউন হল তৃণমূল পরিচালিত বর্ধমান পুরসভা সবেতেই বাদ সাধছে বলে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ। এমনকী পর্যাপ্ত পানীয় জল পেতেও বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে বলে আক্ষপ করছেন তাঁরা।

Advertisement

রানা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৭
Share:

ধর্মতলার পরে বর্ধমান। অমিত শাহের সভা বানচাল করতে ফের প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলল বিজেপি।

Advertisement

আগামী ২০ জানুয়ারি বিজেপি সভাপতির জনসভার জন্য পছন্দসই মাঠ থেকে বৈঠক করার জন্য টাউন হল তৃণমূল পরিচালিত বর্ধমান পুরসভা সবেতেই বাদ সাধছে বলে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ। এমনকী পর্যাপ্ত পানীয় জল পেতেও বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে বলে আক্ষপ করছেন তাঁরা।

বিজেপি নেতাদের মতে, রাজ্য জুড়ে তাঁদের দলের উত্থান আটকানো যাবে না বুঝেই রাজ্যের শাসকদল মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের কর্মীদের আক্রমণ করা হচ্ছে। কলেজে ভোটে এবিভিপি সমর্থকদের মনোনয়ন তুলতে দেওয়া হচ্ছে না। জাতীয় স্তরের নেতারা এসে যাতে এ রাজ্যের মানুষের মন জয় করতে না পারেন, তার জন্য তাঁদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে।

Advertisement

গত নভেম্বরেই ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অমিত শাহের সভার অনুমতি পেতে কালঘাম ছুটেছিল বিজেপির। আইন মেনে সভা করা হচ্ছে না, এই যুক্তি দেখিয়ে সভার অনুমতি দিতে চায়নি কলকাতা পুরসভা ও দমকল। শেষে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিজেপি ওই সভার ছাড়পত্র জোগাড় করে। এ বার বর্ধমানেও সভার প্রস্তুতিতে নানা রকম অসুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে নেতাদের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার কলকাতায় দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “বিজেপির উত্থানে তৃণমূল ভয় পেয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগাচ্ছে। যদিও এ ভাবে সভা বানচাল করা যাবে না। ওই দিন বর্ধমানেই সভা হবে।”

ওই জনসভা ছাড়াও দলের রাজ্য কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করার কথা রয়েছে অমিত শাহের। বিজেপির বর্ধমান জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) দেবীপ্রসাদ মল্লিকের অভিযোগ, জনসভার জন্য তাঁরা উৎসব ময়দান চাইলেও পুরসভা তা দেয়নি। ওই সময়ে সেখানে একটি অনুষ্ঠান চলবে জানিয়ে তারা আবেদন নাকচ করে দেয়। বাধ্য হয়ে পরে বড়নীলপুরে একটি ক্লাবের মাঠে সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। দেবীপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, “টাউন হল দিতেও পুরসভা রাজি হয়নি।

পরে জেলা পরিষদের থেকে আমরা সংস্কৃতি লোকমঞ্চ জোগাড় করেছি।”

বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত দাবি করেন, “বুধবার বিকেলে বিজেপি নেতারা আমার কাছে এলে ওঁদের জানাই, পদ্ধতি মেনে আবেদন করলে এখনও ওঁরা টাউন হল পেতে পারেন। কিন্তু ওঁরা আর নতুন করে আবেদন করতে চাননি।” জট পাকিয়েছে পানীয় জল নিয়েও। বিজেপির দাবি, সে দিন জনসভায় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি থেকে বহু মানুষ আসবেন। কিন্তু পুরসভা জানিয়েছে, সে দিন দুই ট্যাঙ্কারের বেশি জল দেওয়া সম্ভব নয়। পুরপ্রধান বলেন, “ওঁরা আমার কাছে এসে বা আমাদের জল দফতরে গিয়ে বাড়তি ট্যাঙ্কার চাইলে, তা-ও তাঁদের দেওয়া হবে। কিন্তু ওঁরা আবেদনই করেননি।”

শুধু প্রশাসন নয়, সরাসরি তৃণমূলও সভার প্রস্তুতিতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপির। দলের জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, জনসভার প্রচারে পথসভা করতে গেলে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশের সামনেই তা ভন্ডুল করে দেয় তৃণমূলের লোকজন। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সভার প্রচারের জন্য তাঁদের চুনকাম করা দেওয়ালে ফুলও এঁকে দিয়েছে তৃণমূল। বাঁকুড়া মোড় বা নবাবহাটের মোড়ে পথ আটকে দলের কর্মী-সমর্থকদের সভায় আসতে বাধা দেওয়া হতে পারে বলেও বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা।

দেবীপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, “পুলিশকে সবই জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন আশ্বাসও পুলিশ দেয়নি।”

বর্ধমানের এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা তা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “বিজেপির অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।” তৃণমূলের জেলা সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের আশ্বাস, “আমরা কাউকে আটকে বিজেপির সভায় আসতে বাধা দেব না। কোথাও বিজেপির প্রস্তুতি সভা ভন্ডুল করার পরিকল্পনাও নেই।” তাঁর ব্যাখ্যা, “আসলে অমিত শাহের সভায় লোক হবে না বুঝেই ওরা আগে থেকে এই সব গল্প ফাঁদছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement