পুলিশ গাড়ি আটকানোর পরে ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ। বুধবার টবিন রোডের মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
গাড়ি তল্লাশির নামে তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহকে পুলিশ হেনস্থা ও অপদস্থ করেছে এই অভিযোগ তুলে কাঁকিনাড়া স্টেশনে বুধবার রাতে রেল অবরোধ করলেন সমর্থকেরা। তার জেরে শিয়ালদহ মেন শাখার বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন আটকে পড়ে। দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। এক ঘণ্টারও বেশি পরে রাত পৌনে ১১টায় রেল পুলিশ ও ব্যারাকপুর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বরাহনগর থানা এলাকায় টবিন রোডের মোড়ে। ভাটপাড়ার বিধায়ক তথা ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুন সিংহ জানান, তিনি কলকাতা থেকে ব্যবসার কাজ সেরে কালো রংয়ের একটি গাড়িতে ভাটপাড়ায় ফিরছিলেন। চালকের পাশে তিনি বসেছিলেন। রক্ষী-সহ চার জন ছিলেন পিছনের আসনে। টবিন রোড মোড়ের কাছে রাস্তায় বেশি যানবাহন থাকায় চালক গাড়ির গতি কমান। অর্জুনের দাবি, ওই সময় তিনি দেখেন, সশস্ত্র কয়েক জন পুলিশ তাঁর গাড়ির দু’দিকে ছুটে চলেছে। তিনি ভাবেন, রাস্তায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বিধায়কের অভিযোগ, “এক সময় পুলিশ আমার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে। জানালার কাচ নামিয়ে জানতে চাই, কী হয়েছে? এক পুলিশ রিভলভার উঁচিয়ে গালি দিয়ে আমায় গাড়ি থেকে নামতে বলে। বলে গাড়ি তল্লাশি হবে। আমায় টেনে-হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামানো হয়।” অর্জুনের দাবি, তাঁর নির্দেশে আরোহীরা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। বিধায়ক নিজের পরিচয় জানান। বলেন তাঁর গাড়ি প্রশাসনের অনেক অফিসারই চেনেন। তা সত্ত্বেও গাড়ি তল্লাশি হয়। তবে, তার পরে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার দুই অফিসার তল্লাশির জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চান।
বিধায়ক এ দিন রাতে বলেন, “৩৪ বছরের সিপিএম জমানায় এমন ঘটনা ঘটেনি। আজ যখন নিজের দলের সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, সেই সময় পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে আমাকে হেনস্থা করল।” বিধায়ক জানান, ঘটনাস্থল থেকেই তিনি এসএমএস করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘটনাটি জানিয়েছেন। সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও অভিযোগ করেছেন অর্জুন। তাঁর দাবি, “দোষী পুলিশের শাস্তি চাই।”
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার সি সুধাকর বলেন, “বি টি রোডে নিয়ম মাফিক গাড়ি তল্লাশি হচ্ছিল। বিধায়কের গাড়িও তল্লাশি হয়েছে। তবে, কোনও পুলিশ তাঁকে হেনস্থা বা অপমান করেনি।” রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, বি টি রোড দিয়ে গাড়ি চড়ে দাগি এক অপরাধী পালাবে বলে খবর মেলে।
সেই কারণেই তল্লাশি হচ্ছিল। বিধায়কের গাড়ির চালককে অনেক আগেই থামতে বলা হয়েছিল।
চালক গাড়ি থামাননি দেখে টহলদারি পুলিশের সন্দেহ হলে তারা পিছু নেয়। বেশ কিছুটা যাওয়ার পরে চালক গাড়ি থামান।