বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার প্রচারপত্রে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নাম রয়েছে অভিনেতা চিন্ময় রায়ের। ‘উইন অফ আর্থ’ নামে ওই সংস্থা পাততাড়ি গুটোনোর পরে সোমবার বীরভূমের সিউড়ি থানায় চিন্ময়বাবু-সহ আট জনের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ করেন অপূর্ব সরকার নামে এক এজেন্ট। চিন্ময়বাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা) ও ৪০৬ (বিশ্বাসভঙ্গ) ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগকারী অপূর্ব সরকার সিউড়ির বাসিন্দা। তাঁর দাবি, বীরভূমে ওই লগ্নি সংস্থার তিনশোরও বেশি এজেন্ট রয়েছেন। প্রচারপত্রে কলকাতার যাদবপুর এবং যোধপুর পার্ক এলাকায় সংস্থার দু’টি হেড অফিসের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে। সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে প্রদীপকুমার রায়চৌধুরী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর পুষ্পল রায়চৌধুরীর নাম রয়েছে। অপূর্ববাবুর বক্তব্য, “সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে অভিনেতা চিন্ময় রায়ের নাম, ছবি এবং বক্তব্য দেখে বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল। ভেবেছিলাম, এমন এক জন লোক যখন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, তখন তার উপরে ভরসা করাই যায়!”
অপূর্ববাবু এবং ওই লগ্নি সংস্থার আর এক এজেন্ট বরুণ কাহারের দাবি, ২০১২ থেকে ২০১৩-র জানুয়ারি পর্যন্ত এজেন্টরা সব মিলিয়ে জেলা থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার আমানত জোগাড় করেন। কিন্তু তার পরেই আচমকা সংস্থার সিউড়ির অফিসে (জেলায় একমাত্র) তালা ঝুলতে দেখা যায়। সেখানকার ম্যানেজার আশিস রায় বেপাত্তা হয়ে যান। কলকাতার যাদবপুর এবং যোধপুর পার্ক এলাকায় সংস্থার দু’টি অফিসও উঠে যায়। সেখানে ফোন করলে আর কেউ ধরতেন না। তবে ফোন করলে আশিস রায় টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিতেন। সেই আশ্বাসে ভরসা করেই সংস্থা পাততাড়ি গোটানোর এক বছরেরও পরে পুলিশে অভিযোগ করেছেন বলে দাবি অপূর্ববাবুর।
চিন্ময়বাবুর দাবি, “ওই সংস্থা বেআইনি ভাবে আমার নাম ব্যবহার করেছে। সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই এ বিষয়ে প্রথম জানলাম।” তাঁর সংযোজন: পেশাদার শিল্পী হিসেবে টাকার বিনিময়ে ওই সংস্থার অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। সংস্থার প্রযোজনায় তিনি একটি সিনেমার চিত্রনাট্যও লিখেছিলেন। যদিও অর্ধেক শু্যটিং হয়েই ওই সিনেমার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রতারণার ঘটনায় নাম জড়িয়ে যাওয়ায় চিন্ময়বাবু ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করছেন বলে জানিয়েছেন।