আক্রান্ত পরিবার, তবু পুলিশে যাননি মজিদ মাস্টার

শাসনে তৃণমূলের হাতে পরিবার আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করছেন, কিন্তু থানায় অভিযোগ জানাতে যাননি মজিদ মাস্টার (মজিদ আলি)। উত্তর ২৪ পরগনার ভেড়ি-প্রধান এলাকা শাসন-খড়িবাড়িতে এক সময়ে কান পাতলে শোনা যেত, মজিদ বহু অপরাধে জড়িত। কিন্তু তাঁর দাপটে অনেকেই পুলিশ পর্যন্ত সে অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি। এখন বছর পাঁচেক এলাকাছাড়া সেই মজিদ-ই মৌখিক দাবি করছেন, রবিবার শাসনে আধার-কার্ডের জন্য ছবি তুলিয়ে ফেরার পথে তাঁর ছেলে এবং নাতির উপরে হামলা করেছে শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৯
Share:

শাসনে তৃণমূলের হাতে পরিবার আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করছেন, কিন্তু থানায় অভিযোগ জানাতে যাননি মজিদ মাস্টার (মজিদ আলি)।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনার ভেড়ি-প্রধান এলাকা শাসন-খড়িবাড়িতে এক সময়ে কান পাতলে শোনা যেত, মজিদ বহু অপরাধে জড়িত। কিন্তু তাঁর দাপটে অনেকেই পুলিশ পর্যন্ত সে অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি। এখন বছর পাঁচেক এলাকাছাড়া সেই মজিদ-ই মৌখিক দাবি করছেন, রবিবার শাসনে আধার-কার্ডের জন্য ছবি তুলিয়ে ফেরার পথে তাঁর ছেলে এবং নাতির উপরে হামলা করেছে শাসক দল। কিন্তু সে ব্যাপারে মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেননি বৃদ্ধ। কারণ জানতে চাওয়া হলে বলেছেন, “অভিযোগ করে কী হবে? কতই তো ঘটনা ঘটছে, পুলিশ কি আর শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে?”

মজিদ বা তাঁর পরিবার অভিযোগ না জানালেও ঘটনাটি জেনে তদন্ত শুরু করেছে শাসন থানার পুলিশ। তবে ধরা পড়েনি কেউ। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের পর থেকেই শাসনে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলাতে শুরু করে। এলাকার দখল নেয় তৃণমূল। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মজিদ শাসনেই মার খান। তারপর থেকে ওই এলাকা ছেড়ে সপরিবার বারাসতে ডেরা বাঁধেন মজিদ। শাসনে কেবল রয়ে যান তাঁর স্ত্রী আসফনুরি বেগম।

Advertisement

রবিবার সকালে আধার-কার্ডের জন্য ছবি তোলাতে সপরিবার শাসনে যান মজিদের ছেলে মনিরুল ইসলাম। মজিদের দাবি, ফেরার পথে শাসন বাজারে গাড়ি আটকায় তৃণমূলের কিছু কর্মী। মারা হয় মনিরুল এবং তাঁর বছর পনেরোর ছেলে শাহনুরকে।

পুলিশ জানিয়েছে, মজিদের পরিবারকে উদ্ধার করে প্রথমে শাসন থানাতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁদের বারাসতের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। জখম মনিরুলকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর চোখের কাছে দু’টো সেলাই পড়ে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, এর পরেও পরিবারটি লিখিত অভিযোগ করেনি। তিনি বলেন, “জেনারেল ডায়েরি করেছি।” সিপিএম সূত্রের দাবি, পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে ফের হামলা হতেব বলে আশঙ্কা মজিদের পরিবারের। তাই তারা পদক্ষেপ করছে না।

জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য হামলার অভিযোগ মানেননি। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছিলেন, “শাসনে ঢুকলেই মজিদকে দেখে নিতে এলাকার মেয়ে-বউয়েরা আঁশ-বঁটি নিয়ে তৈরি।” এ দিন ফোন করেও জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রীর সুরেই তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ বলেন, “৩০ বছর ধরে মজিদ মাস্টার শাসনের বহু লোককে খুন করেছেন। কঠিন সাজা না হওয়া পর্যন্ত ওঁর মতো লোককে নিহতদের পরিবার কি ছেড়ে দেবে?”

তা বলে মজিদের নাবালক নাতিকে মারধর কি ঠিক হয়েছে? এ বার নির্মলবাবুর জবাব, “আমাদের দলের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত নয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement