আবার সেই সংঘাতের পথে ফিরল এসইউসি

সরকারকে বাগে পেয়ে পথে নেমে আক্রমণাত্মক হতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির। বড় দলগুলির পাশাপাশি ছোট দলেরাও এ বার তাদের সীমিত শক্তি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে চলে যাচ্ছে। কলকাতার রাজপথে বৃহস্পতিবার যেমন পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হল এসইউসির আইন অমান্যকারীদের। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স বাতিল, সারদায় প্রতারিতদের টাকা ফেরত ও দোষীদের শাস্তি-সহ ১৮ দফা দাবিতে এ দিন এসইউসির আইন অমান্য কর্মসূচি ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৩
Share:

মারমুখী পুলিশ। বৃহস্পতিবার। ছবি: প্রদীপ আদক।

সরকারকে বাগে পেয়ে পথে নেমে আক্রমণাত্মক হতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির। বড় দলগুলির পাশাপাশি ছোট দলেরাও এ বার তাদের সীমিত শক্তি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে চলে যাচ্ছে। কলকাতার রাজপথে বৃহস্পতিবার যেমন পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হল এসইউসির আইন অমান্যকারীদের।

Advertisement

জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স বাতিল, সারদায় প্রতারিতদের টাকা ফেরত ও দোষীদের শাস্তি-সহ ১৮ দফা দাবিতে এ দিন এসইউসির আইন অমান্য কর্মসূচি ছিল। কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত ও সভা করার পরে কর্মীরা মিছিল করে ধর্মতলার দিকে রওনা হন। সভায় এসইউসি রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু বলেন, “তৃণমূল দুর্নীতির পাঁকে নিমজ্জিত। কিন্তু এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে যেন, চোররা বিজেপিতে গেলেই সাধু হয়ে যাবে!” এর পর মিছিল নিয়ে ধর্মতলার দিকে যেতে গেলে পুলিশের সঙ্গে এসইউসির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

রাস্তায় এসইউসির জঙ্গি চেহারা নতুন নয়। কিন্তু মাঝে তাদের পুরনো ভূমিকায় ছেদ পড়েছিল। তাদের সঙ্গে তৃণমূলের সাময়িক জোট হয় বাম জমানায়। ২০১১-তে তৃণমূল সরকারে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেই বন্ধুত্বের ইতি হয়ে গেলেও এসইউসিকে রাজ্যের বিরুদ্ধে তেমন আক্রমণাত্মক আন্দোলনে দেখা যায়নি। কিন্তু মাস দেড়েক আগে এসইউসি প্রভাবিত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার নবান্ন অভিযানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। তার পর ফ্রন্টের কয়েকটি কর্মসূচিতে পুলিশ-আন্দোলনকারী সংঘাত হয়। সরকারের বিপর্যস্ত দশাই বিরোধীদের আক্রমণাত্মক করে তুলছে বলে সংশ্লিষ্ট নেতৃত্বের ব্যাখ্যা।

Advertisement

বাম জমানায় রাস্তায় আন্দোলন করে পুলিশ-প্রশাসনকে বিব্রত করত যে এসইউসি, এ দিন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র তাদের পাশেই দাঁড়ান। পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা করে সূর্যবাবু বলেন, “রাজ্যের পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। মাটিতে পরিবর্তন হচ্ছে। পুলিশ বুঝতে পারছে না। সরকারকে সতর্ক করে দিতে চাই, এ জিনিস বেশি দিন চলবে না।” সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষও লাঠিচার্জের নিন্দা করেছেন।

এসইউসি-র অভিযোগ, তারা রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে আইন অমান্য করতে চেয়েছিল। পুলিশ প্রথমে কলেজ স্কোয়ার এবং পরে হিন্দ সিনেমার সামনে কর্মসূচির প্রস্তাব দেয়। শেষে এস এন ব্যানার্জি রোড এবং ধর্মতলার সংযোগস্থলে অনুমতি মেলে। সৌমেনবাবুর অভিযোগ, সেখানে পুলিশের আক্রমণে উত্তম পাড়ুই নামে এক এসইউসি কর্মীর চোখ নষ্ট হয়েছে। লালবাজারের কর্তাদের দাবি, এসইউসি কর্মীরাই পুলিশকে ইট ছোড়েন এবং লাঠি দিয়ে মারেন। তাই আত্মরক্ষার্থে লাঠিচার্জ করতে হয়। পুলিশের অভিযোগ, এসইউসি কর্মীদের মারধরে এসি নূর আহমেদ, নর্থ ডিভিশনের ডিসি-র দেহরক্ষী বিশ্বজিৎ সরকার, এক জন মহিলা কনস্টেবল-সহ ১০ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন