সাংবাদিক বৈঠকে শ্যামল সেন। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র।
বাজার থেকে ঠিক কত টাকা তুলেছে সারদা গোষ্ঠী, এক বছর পরেও তা জানাতে পারল না শ্যামল সেন কমিশন!
সারদা কেলেঙ্কারির পরে গত বছর শ্যামল সেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করে রাজ্য সরকার। গত এক বছরে তারা কী কী কাজ করেছে, শুক্রবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তার ফিরিস্তি পেশ করেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামল সেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কমিশনের অন্য দুই সদস্য অম্লান বসু এবং যোগেশ চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন কমিশনের সচিব মিহির ভট্টাচার্যও। প্রতারিতদের টাকা ফেরানো নিয়ে অনেক কথা বললেও সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে কার্যত কোনও তথ্যই দিতে পারেননি কমিশনের এই সদস্যরা।
সারদা গোষ্ঠী বাজার থেকে কত টাকা তুলেছে, তা জানতে চাওয়া হলে শ্যামলবাবু বলেন, “এই মুহূর্তে বলা যাবে না।” ওই হিসেব এখনও মেলেনি বলে জানান তিনি। মাস কয়েক আগে কমিশনে জেরার জবাবে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন জানিয়েছিলেন, তিনি প্রায় ২০৬০ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছেন। কমিশনের অন্যতম সদস্য যোগেশ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “সুদীপ্ত ওই হিসেব দিলেও তার সপক্ষে কোনও প্রমাণ না থাকায় তা সঠিক বলে মনে করা যায় না।”
গত এক বছরে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত কতটা এগিয়েছে, সাংবাদিক বৈঠকে এসে তারও যথাযথ জবাব দেননি কমিশন-কর্তারা। শ্যামলবাবু বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের কাছে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট দিয়েছি। তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিন।”
এ দিন কমিশনের সদস্যরা মূলত সারদার আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গটিই তুলে ধরেছেন। অম্লান বসু বলেন, “সারদায় টাকা রেখে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছেন সাড়ে ১২ লক্ষ আমানতকারী। তাঁদের মধ্যে ৫ লক্ষ ৯১ হাজার জনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে।” তিনি জানান, এর মধ্যে ১০ হাজারের নীচে জমা দিয়েছেন, এমন ৩ লক্ষ ৯৫ হাজার জনকে চেক পাঠানো হয়েছে। এ বার ২০ হাজার পর্যন্ত যাঁরা জমা দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণের চেক পাঠানো হবে। সারদা ছাড়া অন্য সংস্থার আমানতকারীদের জন্যও কমিশন শুনানি শুরু করেছে বলে এ দিন জানান শ্যামলবাবু। তবে সারদা কাণ্ডের জন্য গঠিত বিশেষ তহবিল থেকে তাঁদের টাকা মেটানো হবে না। শ্যামলবাবু জানান, যে সংস্থার হাতে ওই আমানতকারীরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদেরকেই এই ক্ষতিপূরণের ব্যয় বহন করতে হবে। কমিশন সূত্রের খবর, ২৯ এপ্রিল এই ধরনের কয়েকটি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে হাজির থাকার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।